Kolkata Municipal Corporation & Environment

দূষণ থেকে শহরকে বাঁচাতে পাঠক্রম চালু করছে কলকাতা পুরসভা, জানুয়ারি থেকেই শুরু তোড়জোড়

কলকাতা পুরসভার অধিবেশনে কলকাতার দূষণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। সেই প্রশ্নের জবাবেই নতুন প্রশিক্ষণের পাঠক্রম চালুর কথা জানানো হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:২১
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

কলকাতার দূষণ রুখতে এ বার পাঠক্রম চালু করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছেন মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) স্বপন সমাদ্দার। শনিবার কলকাতা পুরসভার অধিবেশনে কলকাতার দূষণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ।

Advertisement

প্রস্তাবের আকারে সজল বলেন, ‘‘সারা বিশ্বের সঙ্গে কলকাতার দূষণও বাড়ছে। সমস্ত রকমের দূষণের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিকর বায়ুদূষণ, আর সেখানে কলকাতার অবস্থা ভয়ঙ্কর।’’ সঙ্গে তিনি প্রস্তাব হিসাবে বলেন, ‘‘দেশের দূষিত শহরগুলির তালিকায় কলকাতা রয়েছে প্রথম সারিতে। শহরের বিভিন্ন স্থানে এয়ার পিউরিফায়ার টাওয়ার বসানো হোক, তাতে কিছু মাত্রায় দূষণ কমবে।’’ বিজেপি কাউন্সিলরের অভিযোগ প্রসঙ্গে কলকাতার দূষণের দু্রবস্থার কথা মানতে চাননি মেয়র পারিষদ। তাঁর কথায়, ‘‘এয়ার পিউরিফায়ার টাওয়ার বসিয়ে দিল্লির দূষণ কমানো যায়নি। বরং তা বেড়ে গিয়েছে। তাই এয়ার পিউরিফায়ার টাওয়ার কলকাতায় বসানো হবে না। বরং বিকল্প পথে কলকাতার দূষণ কমানো হবে।’’ এমন কথা বলার পরেই তিনি কলকাতায় দূষণ সংক্রান্ত বিষয়ে পাঠক্রম শুরুর কথা জানান।

কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত বিষয়ে শহরে বসবাসকারী মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পাড়ায় পাড়ায় প্রস্তুত করা হবে বিশেষ ধরনের কমব্যাট ফোর্স। এই ফোর্সে যোগদানকারীদের নাম দেওয়া হবে ‘পরিবেশ যোদ্ধা’। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ইচ্ছুক পড়ুয়ারা এই বিশেষ কোর্স করতে পারবেন। জানুয়ারি থেকে কোর্সটি চালুর চেষ্টা চালাচ্ছে কলকাতা পুরসভা। পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে সিলেবাস তৈরি করছেন। তাঁরাই পুথিগত শিক্ষার পাশাপাশি হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দেবেন। সময়ের সঙ্গে যে ভাবে পরিবেশ দূষণের চরিত্র বদলেছে, মূলত সেই সব বিষয়ই পাঠক্রমে প্রাধান্য পাবে।

Advertisement

মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার বলেছেন, ‘‘সপ্তাহে দু’দিন প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ শেষে পুরসভার তরফে শংসাপত্র দেওয়া হবে। প্রশিক্ষিতরা নিজের এলাকায় পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। এমন ভাবে চললে আগামী দিনে কলকাতা শহরের দূষণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে।’’

অন্য দিকে, গত সপ্তাহেই কলকাতার বায়ুদূষণ রুখতে একগুচ্ছ পদেক্ষপ করার নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র। ফিরহাদ বলেন, ‘‘কিছু জায়গায় বায়ুদূষণের পরিমাণ বেশি। যেমন, চিংড়িঘাটা বা ক্যাথিড্রাল রোড। এই সব জায়গার এয়ার কোয়ালিটি বেশ খারাপ। সেখানে দূষণ কমাতে মিস্ট ক্যানন চালানো হবে। সঙ্গে চালানো হবে স্প্রিঙ্কলার।’’ তবে মাস কয়েক আগে পুরসভার একটি কমিটি মিস্ট ক্যানন চালানো বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। পরে অবশ্য সেই নির্দেশ তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু এখনও সেই মিস্ট ক্যানন চালানোর কাজ শুরু হয়নি বলেই মেয়রকে জানানো হয়। তৎক্ষণাৎ মেয়র নির্দেশ দেন, যত দ্রুত সম্ভব শহরে মিস্ট ক্যানন চালাতে হবে। তবে মিস্ট ক্যানন চালানোর ক্ষেত্রে বেশ কিছু পরিকাঠামোগত সমস্যাও রয়েছে। সেগুলি সম্পর্কে পুর আধিকারিকরা মেয়রকে জানিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে পরিবহণ দফতরের সঙ্গে আলোচনা মারফত এলপিজি কেনার প্রয়াস চালিয়েছিল পুরসভা। কারণ শহরের দূষণ কমাতে মিস্ট ক্যানন ও স্প্রিঙ্কলার চালাতে যে পরিমাণ এলপিজির প্রয়োজন হয়, তা একক ভাবে কলকাতা পুরসভার হাতে নেই। পুর আধিকারিকদের মেয়র নির্দেশ দিয়েছেন, বেঙ্গল গ্যাসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে এই সমস্যা মিটিয়ে শীতের মরসুমেই শহরের বায়ুদূষণ রোধের কাজ শুরু করতে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement