বড়দিনের আগেই হতে পারে রাজ্যের পুরভোট। ফাইল চিত্র
রাজ্যে উপনির্বাচন পর্ব সাঙ্গ হয়ে যাবে আগামী ২ নভেম্বর। তারপরেই রাজ্যে কালীপুজো-দীপাবলি-সহ একঝাঁক উৎসব। সেই উৎসবের মরসুম কেটে গেলেই হতে পারে পুরভোট। এমন ভাবনা থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন কলকাতা-হাওড়া ও বিধাননগর পুরসভার কাউন্সিলররা। এমনকি,নেতারা ওয়ার্ড ধরে ধরে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন, যাঁরা টিকিট পাওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। ২০২০ সালের এপ্রিল-মে মাসে কলকাতা পুরসভা-সহ রাজ্যের ১১৭টি পুরসভার ভোটের প্রস্তুতি শুরু করেছিল পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচন কমিশন। কিন্তু করোনা সংক্রমণের প্রথম ঢেউয়ের জেরে স্থগিত হয়ে যায় রাজ্যের পুর নির্বাচন। এর মধ্যে আবার হাওড়া পুরসভার মেয়াদ ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে শেষ হয়ে গিয়েছে। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে শেষ হয়েছে বিধাননগর পুরসভার মেয়াদ।
বর্তমানে কলকাতা-হাওড়া-বিধাননগর-সহ রাজ্যের প্রায় ১২৮টি পুরসভায় সরকারের নিয়োগ করা পুরপ্রশাসকরা রয়েছেন। চলতি বছর এপ্রিল-মে মাসে রাজ্যে বিধানসভা ভোটের পর কোভিড সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আসায় পুরভোট করানোর সাহস দেখাতে পারেনি কমিশন। পরে করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কায় পুরভোট হয়নি। কিন্তু রাজ্যে দু’দফায় সাতটি আসনে ভোট করাচ্ছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুর, জঙ্গিপুর ও শমসেরগঞ্জে ভোট হয়েছে। আবার ৩০ অক্টোবর ভোট হবে খড়দহ, গোসাবা, দিনহাটা ও শান্তিপুরে। তাই কলকাতার কাউন্সিলররা ধরেই নিচ্ছেন রাজ্যে উৎসবের মরসুম কেটে গেলেই পুরভোট হবে। তাই উৎসবের মরসুমকে কাজে লাগিয়ে জনসংযোগ বাড়ানোর দিকে মন দিচ্ছেন তাঁরা। এই কাজে পিছিয়ে নেই হাওড়া ও বিধাননগরের কাউন্সিলররাও।
দক্ষিণ কলকাতার এক কাউন্সিলর জানাচ্ছেন, ‘‘দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে যতটুকু জেনেছি, তাতে বড়দিনের আগেই ভোট হয়ে যাবে।’’ হাওড়া পুরসভার টিকিটের দৌড়ে থাকা এক নেতার কথায়, ‘‘বিধানসভা ভোটের পর বিরোধিরা ছন্নছাড়া। আর বিধানসভা ভোটের পর সাংগঠনিক ভাবেও তৃণমূল অনেকটাই ঘর গুছিয়ে নিয়েছে। এমনতাবস্থায় কলকাতার নেতাদের থেকে যেমন ইঙ্গিত পাচ্ছি, তাতে ডিসেম্বরে ভোট ধরে নেওয়া যেতেই পারে।’’
আর বিধাননগরের এক প্রভাবশালী নেতার কথায়, ‘‘দল চেয়েছিল কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন উপনির্বাচন নিয়ে কী পদক্ষেপ করে, তা দেখে সিদ্ধান্ত নিতে। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন যখন এক মাসের মধ্যেই জোড়া উপনির্বাচন করার সাহস দেখাচ্ছে। তখন ধরে নিতে হবে এটাই পুরভোটের জন্য প্রকৃত সময়।’’ তৃণমূল সূত্রে খবর, যে হেতু কমিশন ২০২০ সালেই ওয়ার্ড সংরক্ষণের তালিকা প্রকাশ করে দিয়েছিল, তাই প্রার্থী চয়নের ক্ষেত্রে অনেক ওয়ার্ডেই যেমন নতুন মুখের দেখা মিলবে। তেমনই বিধানসভা ভোটে ভাল কাজ করা অথচ সংরক্ষণের কোপে পড়া কাউন্সিলরদেরও সঠিক পুর্নবাসন দেওয়া যাবে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, পুরভোট করাতে প্রাথমিক ভাবে যে পরিকাঠামো প্রয়োজন তা তৈরির কাজ হয়ে গিয়েছে। আর রাজ্য সরকার পুরভোট করানোর বিষয়ে আলোচনা শুরু করলেই বাকি কাজও শুরু হয়ে যাবে। প্রসঙ্গত, পুরসভার আসন বিন্যাসের কাজও ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছে। সেই কাজে হাওড়া পুরসভা থেকে বালিকে আলাদা করে যেমন ফের পৃথক পুরসভার করে দেওয়া হয়েছে। তেমনই, ধুপগুড়ি ও ময়নাগুড়ি নতুন পুরসভাও তৈরি হয়ে গিয়েছে। ভোট হবে সেখানেও।