ফাইল চিত্র।
একটি ডিভিশন বেঞ্চ সিবিআইয়ের আবেদন গ্রাহ্য করেনি। পরে সেই একই আবেদন বিবেচনার আশ্বাস দিল কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
সারদা মামলায় অভিযুক্ত মদন মিত্র ১০ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পান। এর আগেও এক বার জামিন পেয়েছিলেন তিনি। সিবিআইয়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৯ দিনের মাথায় তা খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। তারও ন’মাস তিন সপ্তাহ পরে, ৯ সেপ্টেম্বর আলিপুরের নিম্ন আদালত তাঁকে ফের জামিন দিয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ সারদা মামলায় উচ্চ আদালত এক বার যে-অভিযুক্তের জামিন বাতিল করে দেয়, নিম্ন আদালত কী ভাবে তাঁকে জামিন দিতে পারে, সেই প্রশ্ন তুলেছে সিবিআই। মদনবাবুর জামিনের দিনেই ওই তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছিল, প্রাক্তন মন্ত্রীর জামিন বাতিলের আবেদন নিয়ে তারা অবিলম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবে। ১৩ সেপ্টেম্বর সিবিআই উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হলেও বিচারপতি অসীম রায় ও বিচারপতি মলয়মরুত বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জমে থাকা পাহাড়প্রমাণ মামলার কথা তুলে জানিয়ে দেয়, এখনই তাদের আবেদন শোনা সম্ভব নয়।
নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সোমবার বেলা ১১টায় আবার বিচারপতি অসীম রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে মৌখিক আবেদন করেন সিবিআইয়ের বিশেষ আইনজীবী কে রাঘবচারিুলু। কিন্তু তাঁর আবেদন গ্রাহ্যই করেনি ডিভিশন বেঞ্চ। আগের দিন যে-কারণ দেখানো হয়েছিল, তার উল্লেখ করে বিচারপতি রায় বলেন, ‘‘জমে থাকা মামলার নিষ্পত্তির আগে জরুরি ভিত্তিতে সিবিআইয়ের আবেদন গ্রহণ করা সম্ভব নয়। আপনি কয়েকটা দিন অপেক্ষা করুন।’’ বেঞ্চের অন্য বিচারপতি মলয়মরুত বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘এই আদালতে অনেক মামলা জমে গিয়েছে। আগে সেগুলির নিষ্পত্তি হোক।’’ আগের দিন একই আর্জি জানিয়েছিলেন সিবিআইয়ের অন্য আইনজীবী মহম্মদ আসরাফ আলি। তাঁর আবেদনও গ্রাহ্য হয়নি।
বিচারপতি রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে বিফল হয়ে বেলা ২টো নাগাদ সিবিআইয়ের আইনজীবী ও তদন্তকারী অফিসার সটান হাজির হন হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির গিরীশ গুপ্ত (সম্প্রতি তাঁকে প্রধান বিচারপতি পদে নিয়োগ করা হয়েছে, তবে শপথ বাকি) এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। রাঘবচারিলু জানান, তিনি সিবিআইয়ের বিশেষ আইনজীবী। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মামলার দ্রুত শুনানির জন্য তিনি সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে আবেদন জানাচ্ছেন। ‘‘আমি কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করছি না। আমার কোনও ক্ষোভও নেই। একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতির জন্য মদন মিত্রের জামিন খারিজের মামলার দ্রুত শুনানি চাইছি। কারণ, কয়েক দিন পরেই দুর্গাপুজো। লম্বা ছুটি পড়ে যাবে হাইকোর্টে,’’ বলেন রাঘবচারিলু।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সেই সওয়াল শুনে সিবিআইয়ের বিশেষ কৌঁসুলিকে বলেন, ‘‘মৌখিক নয়, আপনি লিখিত আবেদন করুন। বিবেচনা করা হবে।’’ এতে স্বস্তি ছড়িয়ে পড়ে সিবিআইয়ের কৌঁসুলির চোখেমুখে। পরে তিনি বলেন, ‘‘আবেদন বিবেচনা করা হবে বলে আদালতের আশ্বাস পেয়েছি।’’