—ফাইল চিত্র।
প্রশাসন এবং রাজনীতি দু’দিক থেকেই ‘আশাব্যঞ্জক’ নজির গড়ল রাজ্য। সাধারণত বিরোধীরা কোনও অভিযোগ তুললে তাকে খণ্ডন করাই রেওয়াজ। কিন্তু কলকাতা পুরসভা তা করল না। বরং, দক্ষিণ কলকাতায় তৃণমূলের এক ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর নিয়ম ভেঙে প্রতিষেধক দিয়েছেন বলে বিজেপি অভিযোগ করার পরেই তার ভিত্তি আছে বুঝে কড়া পদক্ষেপ করল পুর প্রশাসন।
কলকাতা পুরসভার ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর তৃণমূলের অসীম বসু ওই ওয়ার্ডের কয়েক জনের বাড়িতে গিয়ে কোভিশিল্ড প্রতিষেধক দিয়েছেন বলে সোমবার অভিযোগ করে বিজেপি। দলের মুখপাত্র প্রণয় রায় প্রশ্ন তোলেন, ‘‘দেবাঞ্জনের ভুয়ো প্রতিষেধক-কাণ্ডের পর নানা রকম সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। তা হলে অসীমবাবু কী ভাবে প্রতিষেধক পেলেন?’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘অসীমবাবু কোভিশিল্ড দেওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু পুরসভায় তো কোভ্যাক্সিন আছে। তা হলে ওগুলো ভুয়ো প্রতিষেধক নয় তো?’’ গোটা ঘটনার তদন্ত এবং অসীমবাবুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও তোলে বিজেপি।
বিজেপি ওই অভিযোগ তোলার অব্যবহিত পরেই ভুল স্বীকার করে নেন অভিযুক্ত কো-অর্ডিনেটর অসীমবাবু এবং কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম। শুধু তা-ই নয়, যে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ওই টিকা দেওয়া হয়েছিল, তাঁকে শো-কজও করে পুর প্রশাসন।
অসীমবাবু বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ মানবিকতার খাতিরে আমি জনা চারেক প্রবীণ মানুষকে বাড়িতে গিয়ে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম। ওঁদের পুরসভা থেকে পাওয়া কোভিশিল্ড টিকা সম্পূর্ণ বিনা খরচে দেওয়া হয়েছিল। তবে এটা আমার করা উচিত হয়নি। আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’’ আর ফিরহাদ বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমোদন ছাড়া ওই ভাবে বাড়িতে গিয়ে টিকা দেওয়া ঠিক হয়নি। তবে বাড়িতে পুরসভার দেওয়া কোভিশিল্ড টিকাই দেওয়া হয়েছিল। যে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ওই টিকা দেওয়া হয়েছিল, তাঁকে শো-কজ করা হয়েছে।’’
এর পরেও অবশ্য বিজেপি নিরস্ত হয়নি। এ বার প্রণয়বাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘দলের কো-অর্ডিনেটরকে আড়াল করতে চিকিৎসককে বলির পাঁঠা করা হয়েছে। কো-অর্ডিনেটর ধরা পড়ে গিয়েছেন বলে এখন ক্ষমা চাইছেন।’’