ফাইল চিত্র।
করোনা সংক্রমণের একের পর এক ঢেউ মোকাবিলায় সকলের জন্য টিকার দায়িত্ব থেকে কেন্দ্রীয় সরকার যাতে সরে আসতে না পারে, সেই প্রশ্নে দিল্লির উপরে চাপ বাড়াতে তৎপর হলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। পর্যাপ্ত টিকা সংগ্রহ করে সব রাজ্যকে বিনামূল্যে যাতে তা দেওয়া হয়, এই দাবিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ ১১ জন মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠালেন তিনি। বাম-শাসিত কেরলের মুখ্যমন্ত্রী যে ১১টি রাজ্যকে চিঠি দিয়েছেন, তার সবক’টিতেই অ-বিজেপি সরকার রয়েছে। ওই মুখ্যমন্ত্রীদের কাছে বিজয়নের প্রস্তাব, রাজ্যের উপরে দায় না চাপিয়ে গ্লোবাল টেন্ডার ডেকে টিকা সংগ্রহের ব্যবস্থা করুক কেন্দ্র।
বিনামূল্যে সকলের জন্য টিকার ব্যবস্থার দাবিতে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একাধিক চিঠি দিয়েছেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা। বিজয়নদের দাবিও একই। গ্লোবাল টেন্ডার ডেকে টিকার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়ে বিজয়ন সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীকে যে চিঠি দিয়েছেন, তার প্রতিলিপিও তিনি ১১ জন মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠিয়েছেন। সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য ও কেরলের মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নের বক্তব্য, অতিমারি পরিস্থিতির মধ্যেও কেন্দ্র যে মনোভাব নিয়ে চলছে, তার প্রেক্ষিতে বিভিন্ন রাজ্যকে টিকাকরণের মতো গুরুত্বপূর্ণ জনস্বার্থের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ করতে হবে।
মমতা ছাড়াও তামিলনাড়ুর এম কে স্টালিন, অন্ধ্রপ্রদেশের জগন, তেলঙ্গানার কেসিআর, ছত্তীশগঢ়ের ভূপেশ বাঘেল, ওড়িশার নবীন পট্টনায়ক, ঝাড়খণ্ডের হেমন্ত সরেন, দিল্লির অরবিন্দ কেজরিওয়াল, পঞ্জাবের অমরেন্দ্র সিংহ, রাজস্থানের অশোক গহলৌত এবং মহারাষ্ট্রের উদ্ধব ঠাকরেকে চিঠি পাঠিয়েছেন বিজয়ন। চিঠিতে তিনি বলেছেন, করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় গোটা দেশ বেসামাল। এর পরে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার কথাও শোনা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সকলের জন্য টিকাকরণ ছাড়া পথ নেই। কিন্তু কেন্দ্র সেই লক্ষ্যে উপযুক্ত পদক্ষেপ করছে না বলে বিজয়নের অভিযোগ। রাজ্যগুলিকে প্রয়োজনমতো টিকা কিনতে বলা হচ্ছে অথচ সেটা করলে রাজ্যের কোষাগারে অসম্ভব চাপ পড়বে। রাজ্যগুলির আর্থিক অবস্থা বেহাল হলে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় দেশেরই ক্ষতি। বিজয়নের প্রস্তাব, টিকার জন্য গ্লোবাল টেন্ডার ডাকুক কেন্দ্র। রাষ্ট্রায়ত্ত ওষুধ সংস্থাগুলিকে টিকা উৎপাদনে ব্যবহার করা হোক, তার জন্য প্রয়োজনীয় আইনি সংস্থানের দায়িত্ব কেন্দ্র নিক। জনস্বার্থে রাজ্যের হাতে বিনামূল্যে টিকা তুলে দেওয়ার দায়িত্ব কেন্দ্রকে নিতে হবে বলে বিজয়নের দাবি। তাঁর ওই দাবিকে সমর্থন করে সব রাজ্যকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও।