দীর্ঘ দিন ধরেই কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা দুর্নীতি চলছে বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের। —ফাইল চিত্র।
উপাচার্য সাধন চক্রবর্তীকে অবিলম্বে অপসারণের দাবিতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য আন্দোলন শুরু করলেন কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সমস্ত শিক্ষক-সহ শিক্ষাকর্মী। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়কে দুর্নীতির আখড়া করে রেখেছেন উপাচার্য। তাদের সঙ্গে সরব হয়েছেন রেজিস্ট্রার। সে কারণে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে। যদিও রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মভঙ্গের পাল্টা অভিযোগ করেছেন উপাচার্য।
দীর্ঘ দিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা দুর্নীতি চলছে বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের। যদিও মঙ্গলবার তাঁদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হয়েছে বলে দাবি। অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে নির্মাণকাজের জন্য বহু মূল্যবান গাছ কেটে বিক্রি করা হলেও তার কোনও হিসাব নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা অনিয়মিত হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের নিয়মিত বেতন দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে অনেককে কোনও দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যায়নি। এ হেন বহু দুর্নীতির কথা লিখিত ভাবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আইন ও বিচারমন্ত্রী মলয় ঘটক, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং স্থানীয় বিধায়ককে জানানো হয়।
অভিযোগ, এর পরেই রেজিস্ট্রার চন্দন কোনারকে ইমেল মারফত জানিয়ে দেওয়া হয়, তাঁর আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি নেই। যা ঘিরে শুরু হয় অশান্তি। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে গেলে তাতে বাধা পান রেজিস্ট্রার। তাঁর দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে গেলে নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে গেটেই আটকে দেন।
সে খবর চাউ়র হতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত অধ্যাপক-সহ অন্যান্য কর্মী বিশ্ববিদ্যালয় গেটে চলে আসেন। শুরু হয় বিক্ষোভ। তাতে গেট খুলতে বাধ্য হন নিরাপত্তারক্ষীরা। তার পর শুরু হয়েছে আন্দোলন।
রেজিস্ট্রারের দাবি, ‘‘বহু শিক্ষক বেতন পেলেও তাঁদের কোনও দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে চোখে দেখা যায় না। ক্যাম্পাসের বহু মূল্যবান গাছ কেটে দেওয়া হয়েছে, যার কোনও হিসাব নেই। এ হেন দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত উপাচার্য সাধন চক্রবর্তীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত করার জন্য সরব হয়েছেন আন্দোনকারীরা। তাঁদের হুঁশিয়ারি, উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবেই।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন পর্ষদের আধিকারিক মহেশ্বর মাল্য দাসের দাবি, ‘‘উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী নির্দেশেই রেজিস্ট্রারকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ বাধা পেয়েছেন। পরে অন্য অধ্যাপকরা গিয়ে রেজিস্ট্রারকে ভিতরে নিয়ে আসেন। রেজিস্ট্রারকে নাকি বরখাস্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে সম্ভবত সার্কুলার জারি হয়েছে। তবে আমি দেখিনি।’’
রেজিস্ট্রারকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘বকেয়া ডিএ নিয়ে আন্দোলনকারীদের বেতন কাটা-সহ তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মানুযায়ী পদক্ষেপ করেননি রেজিস্ট্রার। আন্দোলনকারীদের বেতন দিয়ে দিয়েছেন। আবার ১০ মার্চ আন্দোলনের বিষয়ে তথ্য চেয়েও পাওয়া যায়নি। ফলে নবান্নকে রিপোর্ট পাঠানো যাচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা রয়েছে। তা নিয়েও সমস্যা হচ্ছে। এ সমস্ত বিষয় ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী-সহ শিক্ষা দফতরকে জানিয়েছি।’’