বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
টেটের প্রশ্নপত্রে সত্যিই ভুল ছিল কি না তা জানতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করল কলকাতা হাই কোর্ট। প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের ২০১৭ সালের পরীক্ষায় ২১টি প্রশ্নে ভুল ছিল বলে হাই কোর্টে আবেদন করেছিলেন পরীক্ষার্থীরা। তাঁদের দাবি ছিল প্রশ্ন ভুল থাকলে সবাইকে ওই ২১টি প্রশ্নের প্রাপ্য নম্বর দিতে হবে। মামলাকারীদের সেই বক্তব্যের ভিত্তিতেই বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা একটি বিশেষজ্ঞদের কমিটি গঠন করেছেন।
৪৮ ঘণ্টা আগেই এসএসসি মামলা নিয়ে নজিরবিহীন রায় দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। দুর্নীতির অভিযোগের জেরে ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগপ্রক্রিয়াটিই বাতিল করে দিয়েছে হাই কোর্ট। এর পরেই বুধবার টেট মামলাটি নিয়ে সক্রিয় হল হাই কোর্টের বিচারপতি মান্থার সিঙ্গল বেঞ্চ। তিনি জানিয়েছেন, টেটের প্রশ্নে ভুল ছিল কি না তা খতিয়ে দেখবে বিশেষজ্ঞ কমিটি। যা গঠন করবেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
বিচারপতি মান্থার নির্দেশ, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের গঠন করা ওই বিশেষজ্ঞ কমিটি টেটের প্রশ্ন ভুলের অভিযোগ খতিয়ে দেখে তার পরেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। আগামী এক মাসের মধ্যে তাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে রিপোর্ট দিতে হবে। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের টেটে প্রশ্ন ভুলের অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে মামলা করেন রিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী। তাঁদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের বক্তব্য ছিল, ওই বছরের টেটের প্রশ্নপত্রে ২১টি প্রশ্নে ভুল ছিল। প্রশ্নে যদি ভুল থাকে, তবে সবাইকে নম্বর দেওয়া হোক। বিচারপতি মান্থা এর আগের শুনানিতে মামলাকারীদের বক্তব্য শুনে কিছুটা অসন্তোষের সুরেই বলেছিলেন, ‘‘একটা প্রশ্নপত্রে এত ভুল থাকে কী করে? পরীক্ষার্থীরা কি আইনস্টাইন হয়ে ভুল প্রশ্ন আবিষ্কার করে ঠিক জবাব দেবে?’’
বুধবার সেই মামলারই শুনানিতে প্রশ্ন ভুলের অভিযোগ যাচাই করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আর সেই দায়িত্ব পালন করার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছেন।
আপাতত গোটা প্রক্রিয়াটির জন্য এক মাসেরও বেশি সময় দিয়েছে আদালত। জুনের প্রথম সপ্তাহে ৪ জুন লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণা হবে। ওই একই সপ্তাহে জানা যাবে ২০১৭ সালের টেটের প্রশ্নপত্র সত্যিই ভুল ছিল কি না।