প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে অগ্রগতির দাবি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাতে তির্যক মন্তব্য করেছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে আবার সিবিআইকে কড়া মন্তব্য করলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বুধবার আদালতে সিবিআইয়ের দাবি, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের থেকে প্রাপ্ত কিছু সূত্রের ভিত্তিতে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। তবে বিচারপতির পাল্টা দাবি, মানিক সম্পর্কিত বেশ কিছু তথ্য তো তিনিই জানেন। ফলে মামলার তদন্ত সিবিআই করছে না আদালত, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
এই মামলার তদন্তে গত দু’সপ্তাহে অনেক অগ্রগতি হয়েছে বলে বুধবার আদালতে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, ‘‘আমরা কিছু এসএমএস উদ্ধার করতে পেরেছি। তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কিছু সূত্রও আমরা পেয়েছি মানিক ভট্টাচার্যর কাছ থেকে।’’ মানিকের যে দু’টি বৈধ পাসপোর্ট রয়েছে, তা আদালতে জানাতেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কড়া মন্তব্যের মুখে পড়ে সিবিআই। এ বার সিবিআইকেই একগুচ্ছ ‘তির্যক’ প্রশ্ন করে বসেন বিচারপতি। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কত বার লন্ডনে গিয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য? তাঁর বাড়ির ঠিকানা জানেন? আমি বলতে পারি? শুনবেন? লন্ডনে তাঁর বাড়ির পাশে কার বাড়ি জানেন? আমি জানি।’’ সিবিআইয়ের আইনজীবীকে পাল্টা প্রশ্ন করে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘আমি তো আগেই (এটা) বলেছিলাম। আদালত না আপনারা তদন্ত করছেন? ছি ছি! এটা কী হচ্ছে?’’
এই মামলার শুনানিতে আগেই মঙ্গলবার সিবিআই আধিকারিক সোমনাথ বিশ্বাসকে তদন্তের দায়িত্ব থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই প্রসঙ্গে বুধবার সিবিআইয়ের আবেদন ছিল, ‘‘তিন সপ্তাহ পরে আমরা রিপোর্ট পেশ করব। তার পর তদন্তকারী আধিকারিক সোমনাথ বিশ্বাসকে সরানোর নির্দেশ দেওয়া হোক।’’ তবে সেই আবেদন গ্রাহ্য হয়নি। তাঁর স্পষ্ট মন্তব্য— ‘‘না, নির্দেশে পরিবর্তন হবে না।’’ এর পর আদালতের নির্দেশ মোতাবেক বিচারপতিকে তিন জন আধিকারিকের নাম জমা দিয়েছে সিবিআই। কিছু দিন পরে সোমনাথের পরিবর্তে নতুন তদন্তকারী আধিকারিকের নাম জানাবে আদালত।