এসএসএসি ভবনের সামনে বিক্ষোভকারীরা। —নিজস্ব চিত্র।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানকে দেখা করতেই হবে! সোমবার রাতে সল্টলেকের আচার্য সদনের চাকরিহারাদের অবস্থান থেকে এমনই দাবি উঠল। তাঁদের বিক্ষোভের কারণে এসএসসি ভবনের মধ্যেই আটকে রয়েছেন বেশ কয়েক জন আধিকারিক। আন্দোলনকারীদের দাবি, ‘‘যত ক্ষণ পর্যন্ত না চেয়ারম্যান দেখা করছেন, তত ক্ষণ আধিকারিকদের ছাড়া হবে না!’’
ওএমআরে গলদ থাকায় ‘যোগ্য’দের তালিকা থেকে আগেই বাদ গিয়েছে তাঁদের নাম। গত বৃহস্পতিবার থেকে তালিকায় নাম না-থাকা শিক্ষকেরা দফায় দফায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তাঁদের দাবি, যেখানে আদালতে ওএমআরে কারচুপির বিষয়টি এখনও প্রমাণিত হয়নি, সেখানে এসএসসি কী করে তাঁদের ‘অযোগ্য’ বলে দাগিয়ে দিয়ে বেতন বন্ধ করে দিতে পারে? সোমবার ওই ‘অযোগ্য’দের আন্দোলন নতুন মাত্রা নেয়। দুপুরে হাজরা মোড়ে জড়ো হয়েছিলেন তাঁরা। তার পর রাতে আবার এসএসসি ভবনের সামনে অবস্থানে বসেন। খবর, আটকে রেখেছেন এসএসসি-র আধিকারিকদের।
এসএসসি সূত্রে খবর, চাকরিহারাদের বিক্ষোভের মাঝে পড়ে ১৯ জন আধিকারিক আটকে রয়েছেন কমিশনের অফিসে। আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি রীতেশ ঘোষ বলেন , ‘‘আমরা বেশ কয়েক জন আধিকারিককে আটক করেছিলাম। তবে তার মধ্যে কয়েক জন পাঁচিল টপকে পালিয়ে যান। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’’
শনিবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে সাক্ষাতের দাবিতে তাঁর বাড়ির সামনে জড়ো হয়েছিলেন চাকরিহারা এই শিক্ষকেরা। কিন্তু ব্রাত্য তখন বাড়িতে ছিলেন না। এর পরেই মন্ত্রীর বাড়ির সামনে ধর্নায় বসে পড়েন তাঁরা। পরে পুলিশ মারফত মন্ত্রীর থেকে সাক্ষাতের আশ্বাস পেলে তাঁরা অবস্থান তুলে নেন। ঠিক হয়, সোমবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে মিছিল করে যাওয়া হবে। সেই মতো সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে কালীঘাটে তাঁর বাড়ির দিকে মিছিল করে যান আন্দোলনকারীরা। যদিও হাজরা মোড়ে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। তার পরই পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় বিক্ষোভকারীদের। পরে পুলিশ বেশ কয়েক জন আটকও করে।
তবে কে ‘যোগ্য’, কে ‘অযোগ্য’, তা এখনও এত স্পষ্ট নয়। রাজ্যের তরফে আগেই ‘অযোগ্য হিসাবে চিহ্নিত’ বা ‘দাগি’ নন, এমন ১৭ হাজার ২০৬ জন শিক্ষকের নামের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছিল। সেই তালিকা সুপ্রিম কোর্টেও জমা দেয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। গত বুধবার সেখান থেকে বাদ যায় আরও ১৮০৩ জনের নাম। পর্ষদ জানিয়েছে, ওই ১৮০৩ জনের ওএমআর শিট বা উত্তরপত্র-সহ একাধিক বিষয়ে সমস্যা রয়েছে। তাঁদের নাম বাদ দিয়ে নতুন তালিকায় ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ১৫,৪০৩। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, এই শিক্ষকেরা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যেতে পারবেন এবং বেতন পাবেন।