আক্ষেপ চিকিৎসকদের বড় অংশের। ছবি: সংগৃহীত।
পূর্বাঞ্চলের স্বাস্থ্য শিক্ষা কেন্দ্রের স্বীকৃতি মিলেছিল কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল (জেএনএম) হাসপাতালের। সেখানেই মেডিক্যাল এডুকেশন ইউনিট (এমইইউ) গড়ে তোলার লক্ষ্য ছিল কেন্দ্রের। কিন্তু ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের নিয়মের বাইরে গিয়ে এমইইউ-এর আহ্বায়ক পরিবর্তন করায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। বিষয়টিতে ক্ষুব্ধ হয়ে শেষমেশ রাজ্যের ওই মেডিক্যাল কলেজকে যে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে এনএমসি।
বড় মাপের একটা মর্যাদা পেয়েও, তা হারানোয় আক্ষেপ চিকিৎসকদের বড় অংশের। তাঁরা জানাচ্ছেন, বঙ্গের চিকিৎসকদের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিষয়ে যে কোনও প্রশিক্ষণ নিতে অন্য রাজ্যের উপরে ভরসা করতে হয়। সেই পরিস্থিতি বদলাতে অনেক চেষ্টা করে এনএমসি-কে রাজি করানো হয়েছিল। যাতে কল্যাণীর ওই মেডিক্যাল কলেজকে মেডিক্যাল এডুকেশন সেন্টার হিসেবে আঞ্চলিক কেন্দ্রের স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
গত জানুয়ারিতে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের পরিদর্শনের পরে, ফেব্রুয়ারিতে সেই স্বীকৃতিও মেলে। তবে এনএমসি-র সঙ্গে প্রস্তাবিত মেডিক্যাল এডুকেশন ইউনিটের চুক্তি ছিল, সেখানকার আহ্বায়ককে অন্তত চার বছর বদলানো যাবে না। জানুয়ারিতে যখন এনএমসি পরিদর্শন করেছিল, সেই সময়ে আহ্বায়ক ছিলেন জেএনএমের অ্যানাস্থেশিয়ার শিক্ষক-চিকিৎসক ধ্রুব চক্রবর্তী।
সূত্রের খবর, পরিদর্শন থেকে স্বীকৃতি মেলার মাঝের সময়ে প্রথমে জেএনএম-এর অধ্যক্ষ পদে সুবিকাশ বিশ্বাসের বদলে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়কে বসানো হয়। এর পরেই আহ্বায়ক পদ থেকে ধ্রুবকে সরিয়ে সেখানে বসানো হয় কমিউনিটিমেডিসিনের শিক্ষক-চিকিৎসক সুমন রায়কে। এই আহ্বায়ক বদলের বিষয়টি জানতে পেরেই বিরক্ত হন এনএমসি কর্তৃপক্ষ। নিয়ম লঙ্ঘন করে কেন এমন বদল করা হয়েছে, হাসপাতালের অধ্যক্ষের কাছে তার লিখিত জবাব চান তাঁরা।
সূত্রের খবর, এর পাশাপাশি কেন স্বীকৃতি প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে না, সে বিষয়েও ৮ মার্চের মধ্যে উত্তর চাওয়া হয়। রাজ্যের তরফে কোনও জবাব না মেলায় সম্প্রতি স্বীকৃতি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয় এনএমসি। চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, জেএনএম হাসপাতালের থেকে প্রস্তাবিত এমইইউ এবং আঞ্চলিক কেন্দ্রের তকমা তুলে নেওয়া হচ্ছে।
যদিও চিঠির উত্তর না দেওয়ার বিষয়টি মানতে নারাজ রাজ্যের স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুহৃতা পাল। তিনি বলেন, “আহ্বায়ক বদলের বিষয়ে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। কিন্তু ঠিক সময়ে এনএমসি-র চিঠির জবাব দিয়ে, ভুল শুধরে নেওয়ার কথাও জানানো হয়েছিল। বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হয়েছে।”