অযোধ্যা পাহাড়ে নির্মাণের প্রতিবাদে আদিবাসী মিছিল, বন্ধ হাওড়া ব্রিজ, যানজটে নাভিশ্বাস মধ্য কলকাতার

সম্প্রতিই আদিবাসীদের আরও একটি আন্দোলনে পর পর ট্রেন বাতিল হচ্ছে বিভিন্ন শাখায়। কুড়মিদের ওই আন্দোলনের দাবি অবশ্য আলাদা। তবে এই মিছিলের সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১১:৪২
Share:

থমকে গেল কলকাতা। নিজস্ব চিত্র।

সকাল সাড়ে আটটা। অফিসমুখী জনতা হাওড়া স্টেশন থেকে বের হয়ে হাওড়া ব্রিজের মুখে পৌঁছেই আটকে গেল। কারণ হাওড়া ব্রিজ স্তব্ধ। একটি গাড়িরও নড়াচড়ার উপায় নেই। ব্রিজ জুড়ে হলুদ-সবুজ পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে সার সার আদিবাসী মানুষ। তাঁদেরই মিছিলে সাতসকালে ব্যস্ত অফিস টাইমে থমকে যায় কলকাতায় আসার মূল প্রবেশদ্বার হাওড়া ব্রিজ। তার পর একে একে এমজি রোড, উত্তর কলকাতামুখী সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট, গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ, ধর্মতলা চত্বর-সহ প্রায় মধ্য কলকাতার পুরোটাই।

Advertisement

Advertisement

মিছিলে থমকে গেল হাওড়া ব্রিজ। নিজস্ব চিত্র।

কিসের মিছিল? কারা করছেন? কী তাঁদের দাবি? উত্তর পাওয়া গেল একটু পরেই। জানা গেল, পশ্চিম মেদিনীপুরের আদিবাসী সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পরগনা মহলের নেতৃত্বে এই আদিবাসীরা পথে নেমেছেন তাঁদের ধর্মীয় উপাসনার অধিকার চেয়ে। পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে তাঁদের দেবতা মারানবুড়ুর উপাসনা স্থল। সেখানে ওই ধর্মীয় স্থলটি ধ্বংস করে নির্মাণকাজ চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। তার প্রতিবাদেই শুক্রবার সকালে ডেপুটেশন জমা দিতে তাঁরা প্রথমে এসে হাজির হন হাওড়া স্টেশনে। সেখান থেকে রানি রাসমনি রোডে মিছিল করে গিয়ে ডেপুটেশন জমা দেওয়াই তাঁদের লক্ষ্য।

মধ্য কলকাতার কোথায় কোথায় যানজট আদিবাসীদের মিছিলে। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ

সম্প্রতি আদিবাসীদের আরও একটি জনগোষ্ঠীর আন্দোলনের জেরে পর পর ট্রেন বাতিল হচ্ছে বিভিন্ন শাখায়। কুড়মি জনগোষ্ঠীর ওই আন্দোলনের দাবি অবশ্য আলাদা। তাঁরা আন্দোলন করছেন তফসিলি উপজাতি তালিকাভুক্ত হওয়ার দাবিতে। এ ছাড়া কুড়মালি ভাষাকে পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করার দাবিও রয়েছে ওই আন্দোলনের মূলে। রয়েছে কুড়মিদের সারনা ধর্ম চালু করার দাবিও। তবে জাকাত মাঝি পরগনা মহলের দাবি একটিই— তাঁদের ধর্মীয় স্থলে তাঁদের উপাসনা করতে দেওয়া হোক।

সূত্রের খবর, পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের উপরে আদিবাসীদের দেবতা মারানবুড়ুর উপাসনা স্থলে টুরগা পাম্প স্টোরেজ প্রজেক্ট নামে একটি নির্মাণ হচ্ছে। সেই নির্মাণের জেরেই নষ্ট হচ্ছে আদিবাসীদের ধর্মীয় স্থান। স্থানীয় স্তরে সেই নির্মাণের বিরোধিতা করে কোনও লাভ না হওয়ায় শেষে শহরে এসে ডেপুটেশন জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।

আরও পড়ুন:

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement