চিন্তিত নন জাকির হোসেন। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের বিধায়ক জাকির হোসেনের কাছে মজুত অর্থের নথি চেয়েছিল আয়কর দফতর। জাকির জানালেন, ওই নগদ অর্থের উপযুক্ত নথি তিনি আয়কর দফতরকে জানিয়ে দেবেন।
শুক্রবার মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের বিধায়ককে যোগাযোগ করা হয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, আয়কর দফতর কি তাঁর কাছে কোনও নথি চেয়েছে? জবাবে জাকির বলেন, ‘‘আমি বৃহস্পতিবারই আয়কর দফতরের আধিকারিকদের বলেছিলাম, নগদ টাকা মজুতের ব্যাখ্যা দিতে পারব। আজ আমাকে বলা হয়েছে, ওই টাকা সংক্রান্ত সমস্ত নথি আয়করের অফিসে জমা দিতে।’’
প্রসঙ্গত, বুধবারই তৃণমূলের বিধায়ক জাকিরের বাড়ি, দফতর এবং চালকলে আয়কর কর্তারা তল্লাশি অভিযান চালিয়ে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করেন। পরে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় দফতরের তরফে দাবি করা হয়, বিধায়কের বাড়ি থেকে ১১ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। অফিস এবং বাড়ি মিলিয়ে মোট ১৫ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে বলেও দাবি করা হয় বেশ কয়েকটি সূত্রে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছিল, বিধায়কের কাছে এত নগদ অর্থ এল কী ভাবে? বিধায়ক অবশ্য শুক্রবার স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন, কী ভাবে ওই অর্থ এল, তার ব্যাখ্যা তাঁর কাছে রয়েছে। তিনি আয়কর দফতরের কথা মতো সেই নথি জমাও দেবেন।
কিন্তু তিনি নিজে কি হাজির হবেন কলকাতার আয়কর দফতরে? এব্যাপারে বিধায়ককে প্রশ্ন করা হলে তিনি অবশ্য তা স্পষ্ট করেননি। তিনি বলেন, ‘‘আমি সমস্তটা আইনজীবীর মাধ্যমে পাঠিয়ে দেব।’’
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে খবর, রাজ্যের শ্রম দফতরের প্রাক্তন মন্ত্রী জাকিরের সঙ্গে গরু পাচারকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত এনামুল হকের যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে। যদিও জাকিরের বাড়ি থেকে অর্থ উদ্ধারের ঘটনায় শাসক দল তৃণমূল জঙ্গিপুরের বিধায়কের পাশেই দাঁড়িয়েছে। এমনকি, তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এ-ও বলেন যে, ‘‘জাকির হোসেন শুধু একজন বিধায়ক নন, তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীও। বিড়ি শিল্প থেকে শুরু করে কৃষিভিত্তিক শিল্পে তার যোগ আছে৷ ব্যবসায়ী বাড়িতে নগদ রাখতে পারবেন না এটা কে ঠিক করে দিল? শ্রমিকদের তো নগদেই বেতনের টাকা দিতে হয়!’’
(এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় বিধায়ক জাকির হোসেনকে আয়কর দফতর কলকাতায় তলব করেছে বলে লেখা হয়েছিল। কিন্তু তা ঠিক নয়। জাকিরের পরিবার সূত্রে আনন্দবাজার অনলাইনকে জানানো হয়, নথিপত্র চেয়ে পাঠানো হলেও, তাঁকে সশরীরে হাজিরা দেওয়ার কোনও তলব আসেনি। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা আন্তরিক দুঃখিত এবং সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।)