পরপর শিশুকন্যা ‘খুনে’ জেল হেফাজত পরিবারের

একের পর এক শিশুকন্যা খুনের অভিযোগে ধৃত একই পরিবারের পাঁচ জনকে ১৪ দিনের জেল হেফাজত দিল আদালত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:০০
Share:

হাওড়া আদালতে ধৃতেরা। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

একের পর এক শিশুকন্যা খুনের অভিযোগে ধৃত একই পরিবারের পাঁচ জনকে ১৪ দিনের জেল হেফাজত দিল আদালত। সোমবার ধৃত পাঁচ অভিযুক্ত সঞ্জয় গুপ্ত, তাঁর স্ত্রী সঙ্গীতা গুপ্ত, বাবা-মা অমরনাথ গুপ্ত, আশা গুপ্ত এবং দিদি পুনম বর্মাকে হাওড়া আদালতে তোলা হলে এই নির্দেশ দেওয়া হয়। এ দিকে, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে এ দিনও হাওড়ার লিলুয়ার ঘুঘুপাড়ায় উত্তেজনা দেখা গিয়েছে। ভাঙচুরের আশঙ্কায় গুপ্ত পরিবারের বাড়ির সামনে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, যে পরিবার এমন অমানবিক কাজ করতে পারে, তাঁদের আর পাড়ায় থাকতে দেওয়া হবে না।

Advertisement

শনিবার বিকেলে ঘুঘুপাড়ার বাসিন্দারা প্রথমে জানতে পারেন যে, ঢালাই কারখানার কর্মী সঞ্জয় গুপ্তের আড়াই মাসের শিশুকন্যার মৃত্যু হয়েছে। এর আগে আরও দু’টি শিশুকন্যার রহস্যজনক মৃত্যু হওয়ায় বাসিন্দাদের মনে সন্দেহ ছিলই। শনিবার ফের আর এক শিশুকন্যার মৃত্যু হওয়ায় এলাকার মহিলারা সিদ্ধান্ত নেন, তাঁরা সরাসরি ওই পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সত্য জানার চেষ্টা করবেন। সেইমতো রবিবার তাঁরা গুপ্ত পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে যান। অভিযোগ, ওই সময়ে পরিবারের এক-এক জন শিশুটির মৃত্যুর কারণ নিয়ে এক-এক রকম তথ্য দেন। এক জন জানান, মুখে হাত পড়ে যাওয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছে শিশুটি। অন্য এক জন জানান, বিছানা থেকে পড়ে গিয়ে মারা গিয়েছে সে। এতেই সন্দেহ বাড়ে এলাকার মানুষের। এর পরে পরিবারের সদস্যদের এলাকার লোকজন মারধর শুরু করেন। পরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাঁকে। পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে মৃতদেহ কবর থেকে তুলে সুরতহাল করা হয়। ঘটনাটি জানাজানি হতেই গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। গুপ্ত পরিবারের টালির চালের ঘরের সামনে ভিড় জমে যায়। গণপিটুনির আশঙ্কায় বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে ওই পরিবারের লোকজনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

সোমবার, সেই ঘটনার দু’দিন পরেও ঘুঘুপাড়ায় উত্তেজনা দেখা গিয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা যে ওই পরিবারের উপরে রীতিমতো ক্ষিপ্ত, তা বোঝা যায় তাঁদের সঙ্গে কথা বলে। এ দিন এলাকার বাসিন্দা সৌমেন চৌধুরী বলেন, ‘‘ওই পরিবাররটির সাজা হলে ভাল। কিন্তু জামিন পেয়ে এলাকায় এলে, আমরা ওদের পাড়ায় থাকতে দেব না। এ ব্যাপারে আমরা সবাই একজোট।’’ একই বক্তব্য আর এক স্থানীয় বাসিন্দা অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, ‘‘জেল থেকে ফিরে এলেও ওই পরিবারটিকে থাকতে দেওয়া যাবে না বলে পাড়ার লোকজন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ দিনও সকাল থেকেই এ নিয়ে উত্তেজনা ছিল। পুলিশের নজরদারি থাকায় কোনও বড় ঘটনা ঘটেনি।’’

Advertisement

এ দিকে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশুটির দেহের ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, সে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছে। হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, এ ব্যপারে চিকিৎসকের বিস্তারিত রিপোর্ট পাওয়ার পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এটি খুন না দুর্ঘটনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement