ধৃত সমরেশ সরকার।
সমরেশ সরকারের প্রেমিকা সুচেতা চক্রবর্তীর বাড়িতে গিয়ে কোনও চিহ্নই পেল না পুলিশ! ঘটনার পুনর্নির্মাণে শনিবার গভীর রাতে সমরেশকে নিয়ে সুচেতার আবাসনে যান তদন্তকারী অফিসাররা। কিন্তু কোথায় কী! সব প্রমাণই ঠাণ্ডা মাথায় লোপাট করে দিয়েছেন সমরেশ! তদন্তকারী অফিসাররাও বিষয়টিতে খুবই অবাক। এক জন পেশাদারি খুনিরাই এমন কাজ করতে পারে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ধরা পড়ার পর থেকেই নানা রকম তথ্য দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। কখনও বলেছেন, সুচেতা আত্মঘাতী হয়েছেন, কখনও বলেছেন তিনি খুন করেছেন। তাঁর কথার মধ্যে অসঙ্গতি ধরা পড়ায় সন্দেহ আরও গভীর হয়েছে। সত্যতা যাচাই করতে শনিবার গভীর রাতে সমরেশকে নিয়ে সুচেতার আবাসনে যায় পুলিশ। আবাসনের ভিতরে ঢুকে সব কিছু খতিয়ে দেখে তারা। কোথাও রক্তের দাগ লেগে আছে কি না বা যে বঁটি বা অস্ত্র দিয়ে সুচেতাদেবীর দেহ খণ্ড খণ্ড করা হয় তা-ও খতিয়ে দেখেন অফিসাররা। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘরের কোথাও রক্তের দাগ মেলেনি। এমনকী কোনও বড় বঁটি বা অস্ত্রও পাওয়া যায়নি ওই ঘর থেকে। তবে রান্নাঘরে সাধারণ মাপের একটি বঁটি মিলেছে বলে পুলিশের দাবি। প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে আবাসনের ঘরগুলিতে তল্লাশি চালানো হয়। এমনকী বাড়ির ড্রেনেও কোনও রক্তের দাগ মেলেনি।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, খুব ঠান্ডা মাথায় এবং পরিকল্পিত ভাবে সুচেতাদেবীকে খুন করেছেন সমরেশ। তার পর ঘর পরিষ্কার করে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছিলেন তিনি। তাঁর ট্রেনে আসার প্রসঙ্গটিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তিনি আদৌ ট্রেনে এসেছিলেন না কি ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ব্যাগগুলি নিয়ে এসেছিলেন? সেই প্রশ্নের উত্তরের খোঁজে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
গঙ্গায় ফেলে দেওয়া সমরেশবাবুর বাকি ব্যাগ দু’টি খুঁজতে এ দিন সকাল থেকে তল্লাশি চালানো হয়। ওই ব্যাগের মধ্যেই খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র থাকতে পারে বলে পুলিশের অনুমান।
এ দিন সমরেশকে শ্রীরামপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।