ধনখড়কে কটাক্ষ কুণালের। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
প্রথমে বিজেপি-কেও আত্মানুসন্ধানের পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে বাজেট অধিবেশনে তাঁর বক্তৃতা সম্পূর্ণ করতে না পারার দায় পুরোপুরি বিধানসভার ‘বোনেদের’ দিকেই ঠেলে দিলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ‘ভগিনীপ্রতিম’ রাজ্যের মহিলা মন্ত্রী শশী, চন্দ্রিমাদের কটাক্ষ করে বললেন ওঁরা বিধানসভার সংস্কৃতিকে কলঙ্কিত করেছেন। যদিও রাজ্যপালের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূলের জবাব, উনি নাটক করছেন।
সোমবার বিধানসভায় হইহট্টগোলের পর রাতেই এ নিয়ে টুইট করেন ধনখড়। পর পর দু’টি টুইটে তিনি যা লিখেছেন, তার সার মর্ম এই যে, সোমবার বিধানসভার অধিবেশন যে ভাবে নষ্ট করা হয়েছে, তাতে তিনি বিরক্ত এবং বিচলিত। রাজ্যপাল এ কথাও লিখেছেন যে, ‘যত না আহত হয়েছি, তার চেয়ে অনেক বেশি দুঃখ পেয়েছি আমাদের মহিলা মন্ত্রী এবং বিধায়কদের আচরণে। ওঁরা আমার পথরোধ করেছিলেন। এতে আমাদের সংস্কৃতি কালিমালিপ্ত হয়েছে।’
সোমবার রাত ন’টা নাগাদ এই টুইট করেন রাজ্যপাল। যদিও তার ঘণ্টা খানেক আগে সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপি এবং তৃণমূল দু’পক্ষকেই বিধানসভার আচরণের জন্য আত্মানুসন্ধানের পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিজেপি-র বিধায়কদের বিষয়ে কোনও উল্লেখ নেই ধনখড়ের পরের টুইটেও। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আমার বার বার অনুরোধ সত্ত্বেও কেউ কথা শোনেননি। আমার বিধায়ক এবং মন্ত্রী বোনেদের আগ্রাসী মনোভাবের সঙ্গে বাধ্য হয়েই মানিয়ে নিতে হয়েছে আমাকে।’
রাজ্যপালের এই টুইটের জবাবে তৃণমূলের তরফে রাজ্যসম্পাদক এবং দলীয় মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘গোটাটাই সাজানো নাটক! বিধানসভায় রাজ্যপালের বক্তৃতার আগে বিজেপি-র বিক্ষোভ যেমন একটা নাটক। তেমনই বিক্ষোভ মেনে নিয়ে রাজ্যপালের কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে চাওয়াটাও কম নাটকীয় নয়।’’
প্রসঙ্গত, সোমবার বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনে রাজ্যপাল তাঁর বাজেট বক্তৃতা সম্পূর্ণ করতে পারেননি। ওয়েলে নেমে বিজেপি-র বিক্ষোভের জেরে রাজ্যপাল বক্তৃতা না দিয়েই বিধানসভা থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলে তাঁকে প্রথমে হাতজোড় করে অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে বিধানসভার মহিলা বিধায়ক এবং মন্ত্রীদেরও দেখা যায় রাজ্যপালকে ঘিরে ধরে তাঁকে বক্তৃতা সম্পূর্ণ করার অনুরোধ জানাতে। শেষে বক্তৃতার ভাষ্যটির প্রথম এবং শেষ লাইন পাঠ করেই শেষ পর্যন্ত বিধানসভা ছাড়েন রাজ্যপাল।