—ফাইল চিত্র
কৃষকদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ সারলেন। কিন্তু পাশে বসা কৃষিজীবীদের কাছে তাঁদের জীবন-জীবিকা সম্পর্কে কোনও কথাই তুললেন না বিজেপি সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা।
শনিবার মালদহে বিজেপি সভাপতির এই কর্মসূচি ও তা ঘিরে ওঠা এই অভিযোগেই তরজা শুরু হয়েছে রাজ্যের শাসক ও বিরোধীদের। এ দিন দুপুরে পুরাতন মালদহের ডিস্কো মোড়ে সহভোজ অনুষ্ঠানে দুই কৃষককে পাশে বসিয়ে খিচুড়ি- তরকারি খেয়েছেন নড্ডা। তবে তাঁর দু’পাশে থাকা দুই কৃষকের নাম ও পরিচয় জানলেও তাঁদের সমস্যার কথা শোনেননি বলে দাবি কর্মসূচিতে হাজির
কৃষকদের একাংশের। সহভোজে উপস্থিত কৃষক দিগম্বর মাহাতোর বক্তব্য, ‘‘নাম, পরিচয় শুনেছেন। তবে সমস্যার কথা শোনেননি।’’ আর এক কৃষক গুলবদন বিশ্বাস বলেন, ‘‘চাষবাসের সমস্যার কথা জানানোর ইচ্ছে ছিল। বলা হয়ে ওঠেনি।’’ সহভোজের পাশাপাশি ২৫টি স্টল ঘুরে দেখে ইংরেজবাজার শহরের মেগা রোড-শোতেও যোগ দেন নড্ডা। আটশো মিটার এলাকা গাড়িতে ঘোরেন তিনি। বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডল বলেন, ‘‘রোড-শোতে রাজমোহল রোডে তিলধারণের জায়গা ছিল না।’’
বিজেপির এই সহভোজ নিয়ে কটাক্ষ করেছে তৃণমূলও। তৃণমূলের মালদহের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘সাধারণ চাষিদের বদলে দলেরই নেতা-কর্মীরাই হাজির ছিলেন।’’ তিনি বলেন, ‘‘এক দিকে আইন করে কেন্দ্র কৃষকদের ভাতে মারছে। অন্যদিকে, কৃষক দরদি সেজে খাওয়াদাওয়া করছেন বিজেপি নেতারা। বিজেপির দু’মুখো নীতি বাংলার মানুষ বুঝে গিয়েছেন।’’
এদিন ১২টা নাগাদ হেলিকপ্টারে মালদহে আসেন নড্ডা। সড়ক পথে পৌঁছন ইংরেজবাজার শহরের মাধবনগরের কেন্দ্রীয় কৃষি গবেষণা সংস্থায়। তারপরে সহভোজ কর্মসূচিতে কৃষকদের প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন নড্ডা। তিনি বলেন, ‘‘মমতার নিজের অহং, জেদের কারণেই কেন্দ্রের প্রকল্প থেকে বাংলার ৭০ লক্ষ কৃষক বঞ্চিত রয়েছেন। বাংলার কৃষকেরা সরব হওয়ায় এখন তিনি পস্তাচ্ছেন। পাখি উড়ে গিয়েছে, আর আফশোস করে লাভ নেই। বাংলায় বিজেপি ক্ষমতায় এলে কৃষকেরা নিজেদের অধিকার পাবেন।’’
এ বারের কেন্দ্রীয় বাজেটে কৃষকদের জন্য প্রধানমন্ত্রী এক লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন বলে দাবি করেন তিনি। তিনি এও বলেন, ‘‘কৃষকদের জন্য কেন্দ্র ট্রেনও দিয়েছে।’’ জয় শ্রীরাম স্লোগান নিয়ে নড্ডা বলেন, ‘‘মমতাদি এখন যেখানেই বক্তব্য রাখছেন সেখানেই জয় শ্রীরাম ধ্বনি উঠছে। জয় শ্রীরাম ধ্বনিতে ওঁর (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) এত রাগ কেন? আমি হাত নাড়লেই, সকলেই জয় শ্রীরাম ধ্বনি দেন। আমার তো রাগ হয় না।’’