যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাগিংয়ের কারণে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় কড়া পদক্ষেপের বার্তা দেন আচার্য তথা রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তার পরেই মঙ্গলবার ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তির সিদ্ধান্ত নিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, এ দিন অ্যান্টি-র্যাগিং কমিটির বৈঠকে শাস্তির বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এবং তার ভিত্তিতে অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াডের সুপারিশ অনুযায়ী ৫ ছাত্রকে ৪টি সিমেস্টারের জন্য সাসপেন্ড এবং হস্টেল থেকে আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এঁদের মধ্যে এক জন এখন জেলে আছেন। ২৫ জন ছাত্রকে ১টি সিমেস্টারের জন্য সাসপেন্ড এবং হস্টেল থেকে আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আচার্য তথা রাজ্যপাল বলেছিলেন যে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলে তবেই তিনি সমাবর্তন নিয়ে কোর্ট বৈঠক ডাকার বিষয়ে মত দেবেন। তার পরেই এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন শিক্ষা মহলের অনেকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের খবর, এই ঘটনায় অভিযুক্ত ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র সংসদের (ফেটসু) প্রাক্তন চেয়ারপার্সন অরিত্র মজুমদারকে (তিনি বর্তমানে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত) ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। বাংলা বিভাগের রুদ্র চট্টোপাধ্যায়কেও ১ মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। তবে অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি সুপারিশ করেছিল, অরিত্র গবেষণা শেষ করার পরে আর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। রুদ্রকে বিষয়টি নিয়ে সর্তক করার সুপারিশ করেছিল ওই কমিটি। কিন্তু অ্যান্টি-র্যাগিং কমিটির বৈঠকে সেই শাস্তি বাড়ানো হল বলেই ওয়াকিবহাল মহলের মত। এর পাশাপাশি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অংশুমান মণ্ডল, দীপক মণ্ডল, নাসিম আহমেদ মল্লিক, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অঙ্কন সরকার এবং পদার্থবিদ্যার প্রীতম প্রামাণিককে ৪টি সিমেস্টার বা দু’বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড হওয়া ২৫ জন ছাত্রের অধিকাংশই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র।
এ দিন যাদবপুরের অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ বলেন, “সোমবারই রাজ্যপালকে এই বিষয়ে অ্যান্টি-র্যাগিং স্কোয়াডের সুপারিশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।" বুদ্ধদেবের বক্তব্য, “শাস্তির মাত্রা অনেক বাড়ানো হয়েছে। তবে প্রত্যেককেই আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হবে।”