Contai Sub divisional Hospital

‘গোপনে’ সাত নাবালিকার প্রসব করানোর অভিযোগ, কাঠগড়ায় কাঁথি মহকুমা হাসপাতাল

শিশু সুরক্ষা কমিটি খোঁজ শুরু করতেই ২৪ এপ্রিল মহকুমা হাসপাতালের ফেসিলিটি ম্যানেজার লিখিত ভাবে কাঁথি থানায় একটি রিপোর্ট জমা দেন। সেখানে তিনি দুই নাবালিকার প্রসবের বিষয়ে জানান। এক জনের বয়স ১৬ বছর, অন্য জনের ১৭ বছর।

Advertisement

কেশব মান্না

কাঁথি শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২৪ ০৫:৪৯
Share:

—প্রতীকী ছবি।

পুলিশ, প্রশাসন ও জেলা শিশু সুরক্ষা কমিটিকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে চলতি মাসে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে অন্তত ৭ নাবালিকার প্রসব করানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। নিয়ম অনুযায়ী, কোনও নাবালিকা যদি অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় প্রসব বা গর্ভপাতের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়, তা হলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল বা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ, প্রশাসন ও শিশু সুরক্ষা কমিটিকে জানাতে হয়। কিন্তু এই নাবালিকাদের ক্ষেত্রে খোদ সরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেন সেই নিয়ম ভাঙলেন, তার সদুত্তর মেলেনি।

Advertisement

এমনিতেই রাজ্যে নাবালিকা মায়ের সংখ্যা বৃদ্ধিতে স্বাস্থ্য দফতর উদ্বিগ্ন। তার উপর ‘ন্যাশনাল চাইল্ড প্রোটেকশন সোসাইটি’ এবং ‘স্টেট চাইল্ড প্রোটেকশন সোসাইটি’-র সমীক্ষা অনুযায়ী, রাজ্যে বাল্যবিবাহ এবং নাবালিকাদের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার সংখ্যায় শীর্ষে পূর্ব মেদিনীপুর। সেই জেলার সরকারি হাসপাতালে ‘গোপনে’ একের পর এক নাবালিকার প্রসবের অভিযোগ উঠেছে।

নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিতকুমার দেওয়ানের কথায়, ‘‘জেলা শিশু সুরক্ষা দফতর থেকে বিষয়টি জেনে হাসপাতালের সুপারকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি ঘটনার কথা স্বীকার করেন। তাঁর কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। পুলিশকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।’’ হাসপাতালের সুপার অবশ্য সংবাদমাধ্যমকে কিছু বলতে চাননি।

Advertisement

সূত্রের দাবি, যে সব আশাকর্মী ওই নাবালিকাদের হাসপাতালে এনেছিলেন, তাঁদেরও চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যদিও কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার শেখ মইদুল ইসলাম দাবি করেছেন, ‘‘নিয়ম মেনেই সব কিছু হয়েছে।’’ হাসপাতাল সূত্রে অবশ্য দাবি, এই প্রথম নয়, কাঁথি এবং আশপাশের রামনগর, এগরা, ভগবানপুর থেকে অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকাদের আশাকর্মীরাই হাসপাতালে প্রসবের জন্য আনেন।

জেলা শিশু সুরক্ষা কমিটির চেয়ারপার্সন জীবনানন্দ দাশের বক্তব্য, ‘‘সাতটি অভিযোগ পেয়েছি। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে পকসো ধারায় পুলিশকে মামলা করতে বলা হয়েছে।’’

সূত্রের দাবি, শিশু সুরক্ষা কমিটি খোঁজ শুরু করতেই ২৪ এপ্রিল মহকুমা হাসপাতালের ফেসিলিটি ম্যানেজার লিখিত ভাবে কাঁথি থানায় একটি রিপোর্ট জমা দেন। সেখানে তিনি দুই নাবালিকার প্রসবের বিষয়ে জানান। এক জনের বয়স ১৬ বছর, অন্য জনের ১৭ বছর। দু’জনেই ২২ এপ্রিল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সূত্রের দাবি, সাত জনের মধ্যে কয়েক জনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। সব ক্ষেত্রেই পকসো ধারায় মামলা হবে বলে ইঙ্গিত মিলছে। কাঁথি মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলাশাসক জয়শী দাশগুপ্তের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছেও খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement