প্রতীকী ছবি।
আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির জন্য প্রথম দফায় ক্ষতিপূরণ বাবদ ২০ হাজার টাকা পেয়েছিলেন কালীপদ মান্না। টাকা তুলে বাড়ি মেরামতও করেন। দ্বিতীয় দফার ক্ষতিপূরণ প্রাপকের তালিকায় ফের নাম উঠেছে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক ব্লকের বহিচবেড়িয়া গ্রামের সেই কালীপদর। এ বার তাঁর বাড়ির আংশিক ক্ষতির জন্য ৫ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
আবেদন না করেও দ্বিতীয় দফায় কী করে নাম উঠল, এর জবাব যখন খুঁজছেন কালীপদ, তখনই অন্য বিপত্তি। মঙ্গলবার সকালে তাঁকে ব্লক প্রশাসনের নোটিস ধরিয়ে জানানো হয়েছে, চার সদস্যদের তদন্ত কমিটি দেখেছে, তাঁর বাড়ির কোনও ক্ষতিই হয়নি। ২০ হাজার টাকা ফেরত দিতে হবে। অন্যথায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একই ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রশাসনের দু’রকম অবস্থান ঘিরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পেশায় তাঁতি কালীপদ বলছেন, ‘‘ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার টাকা দিয়ে তো বাড়ি মেরামত করে ফেলেছি। টাকা ফেরাব কী করে!’’
স্ত্রী-ছেলে নিয়ে তিন জনের পরিবার কালীপদর। মাটির দেওয়াল, টালির চালের বাড়ি তাঁর। গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আমপানে বাড়ির চাল ভেঙেছিল বলে বিডিও অফিসে ক্ষতিপূরণের আবেদন জানিয়েছিলেন কালীপদ। ২০ হাজার টাকা তাঁর আকাউন্টে জমাও পড়ে। ১৪ অগস্ট দ্বিতীয় দফায় আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের যে তালিকা প্রকাশিত হয়, তাতেও আবার কালীপদর নাম ছিল, এ বার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির তালিকায়।
এই ধাঁধার মধ্যেই মঙ্গলবার কালীপদের বাড়িতে বিডিও-র একটি নোটিস পৌঁছয়। সেখানেই জানানো হয়, ‘আপনি ভুলক্রমে ওই টাকা পেয়েছেন। তাই আপনাকে উক্ত ২০ হাজার টাকা নিম্নলিখিত অ্যাকাউন্টে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।’
কালীপদ বলছেন, ‘‘আমার বাড়ির সত্যি ক্ষতি হয়েছিল। ক্ষতিপূরণের টাকায় বাড়ি মেরামতও করেছি। দ্বিতীয় দফায় আবেদনই করিনি। কী যে হচ্ছে বুঝছি না।’’ এই ঘটনায় সরব হন তমলুকের এসইউসি নেতা শম্ভু মান্না। তিনি বলেন, ‘‘প্রশাসনের তদন্ত কমিটি যদি দেখেই বাড়ির ক্ষতি হয়নি, তা হলে দ্বিতীয় দফায় আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে কালীপদর নাম থাকল কেন। প্রশাসন ভুল করেছে। আমরা চাই ওই নোটিস প্রত্যাহার করা হোক।’’ তমলুকের বিডিও গোবিন্দ দাস বলেন, ‘‘কিছু ক্ষেত্রে আগে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হলেও পরে সংশোধন করে সেই টাকা ফেরতের জন্য নোটিস দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে খতিয়ে দেখতে হবে।’’