সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্তের সঙ্গেই আরও কয়েকটি বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার তদন্তে নেমেছিল সিবিআই। এ বার রাজ্যের একটি অর্থ লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় সরকার। মে মাসের মধ্যে ওই তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট পেশ করতে হবে।
রেজিস্ট্রার অব কোম্পানিজ (আরওসি) সূত্রের খবর, এই নির্দেশের প্রেক্ষিতে ভিবজিওর এবং তার সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেনে জড়িত ৩০টির বেশি সংস্থার বিরুদ্ধে নতুন তদন্তের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
বছরখানেক আগে সংশ্লিষ্ট গ্রুপের বিরুদ্ধে এক বার অনুসন্ধান চালিয়েছিল কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক। তার রিপোর্টও দিল্লিতে জমা পড়ে। আধিকারিকদের একাংশের ব্যাখ্যা, সেই রিপোর্ট দেখে শীর্ষ মহল মনে করছে, নতুন করে সংস্থাটির কাজকর্ম নিয়ে তদন্ত করা উচিত। সে-ক্ষেত্রে লগ্নি সংক্রান্ত অনেকে নতুন তথ্য প্রকাশ্যে আসতে পারে বলে মনে করছেন মন্ত্রকের আধিকারিকেরা। ৩৫টি কোম্পানির একটি তালিকা আরওসি-র কাছে পাঠিয়েছে মন্ত্রক।
কোম্পানিগুলি নিজেদের মধ্যে কত টাকা বা ঋণ হস্তান্তর করেছে, তা খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা। কোম্পানিগুলির মাধ্যমে বাইরের কোনও সংস্থা বা ব্যক্তি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে উপকৃত হয়েছেন কি না, তা-ও থাকবে তদন্তের আওতায়। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের ক্ষেত্রে কোম্পানি আইন মানা হয়েছে কি না, স্বল্প পরিসরে শেয়ারের হস্তান্তর এবং সর্বোপরি আর্থিক লেনদেনের ব্যাপারে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমোদন কোম্পানিগুলির কাছে রয়েছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হবে।
কিন্তু হঠাৎ এমন পদক্ষেপ কেন?
ওই মন্ত্রকের কর্তাদের একাংশের অনুমান, লগ্নি সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে তদন্তের জাল ধীরে ধীরে গুটিয়ে নিতে চাইছে কেন্দ্র। শুধু সারদা নয়, তার সমসাময়িক একাধিক লগ্নি সংস্থা দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থাকায় অনেক মানুষ আর্থিক ভাবে প্রতারিত হন বলে অভিযোগ। কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের নজরদারির পূর্ণ দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও এত বিপুল সংখ্যক সংস্থা কী ভাবে দীর্ঘদিন ধরে অসাধু কাজ চালিয়ে গেল, জোরদার হচ্ছে সেই প্রশ্নও। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা বাদে গোটা দেশে রিজিওনাল ডিরেক্টরদের রদবদল করে এবং নতুন করে তদন্তের নির্দেশের মাধ্যমে ওই মন্ত্রক তৎপরতা বাড়াচ্ছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট শিবির।