TET Scam

কোনও পদ্ধতি মানা হয়নি! বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সামনে স্বীকার করে নিলেন টেটের অধিকাংশ পরীক্ষক

টেট পরীক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ৩০ জন ইন্টারভিউয়ারকে ডেকে বয়ান নিয়েছিলেন বিচারপতি। চলেছিল রুদ্ধদ্বার শুনানি। অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট নিয়ে কী জানিয়েছিলেন তাঁরা, এ বার প্রকাশ্যে এল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৩:৩০
Share:

হাই কোর্টে রুদ্ধদ্বার শুনানির সময় ইন্টারভিউয়াররা স্বীকার করে নিলেন, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা (টেট)-র অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট ‘সঠিক পদ্ধতি’ মেনে হয়নি। গ্রাফিক্স: শৌভিক দেবনাথ।

প্রার্থীরা অভিযোগ করেছিলেন বার বার। এ বার সেই অভিযোগ মেনে নিলেন ইন্টারভিউয়াররা। হাই কোর্টে রুদ্ধদ্বার শুনানির সময় তাঁরা স্বীকার করে নিলেন, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা (টেট)-র অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট ‘সঠিক পদ্ধতি’ মেনে হয়নি। সেই মর্মে নথিতেও সই করেছেন তাঁরা। সেই নথি প্রকাশ করলেন মামলাকারী প্রার্থীদের আইনজীবী।

Advertisement

২০১৪ সালে টেট হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ হয়। এক লক্ষ ছ’ হাজার জন টেট উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৪২ হাজার ৫০০ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। ওই নিয়োগের ক্ষেত্রেই অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন বেশ কয়েক জন প্রার্থী। মামলাকারীদের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি আদালতে দাবি করেছিলেন, অনিয়ম হয়েছে। সঠিক পদ্ধতিতে কারও অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট হয়নি। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই তিন জেলার ৩০ জন ইন্টারভিউয়ারকে ডেকে রুদ্ধদ্বার শুনানি করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানেই ২৫ জন ইন্টারভিউয়ার স্বীকার করেন, ‘সঠিক পদ্ধতিতে’ অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট হয়নি। অনেক প্রার্থীর কোনও অ্যাপ্টিটিউড টেস্টই নেওয়া হয়নি। নিজেদের বয়ানের নথিতে সইও করেছেন ওই ইন্টারভিউয়াররা। সেই নথি এ বার তুলে ধরেন আইনজীবী।

নথিতে দেখা গিয়েছে, কোনও ইন্টিরভিউয়ার জানিয়েছেন, বোর্ডের তরফে অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট নিয়ে আলাদা কোনও নির্দেশিকাই ছিল না। তাই অ্যাপ্টিটিউড টেস্টে কত নম্বর ছিল, তা-ও তাঁরা জানতেন না। এক ইন্টারভিউয়ার জানিয়েছেন, অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট যে নিতে হবে, সে কথাই কেউ জানাননি। এক ইন্টারভিউয়ার রুদ্ধদ্বার শুনানিতে জানিয়েছেন, অ্যাপ্টিটিউড পরীক্ষা নেওয়ার জন্য আলাদা কোনও জায়গা তাঁদের দেওয়া হয়নি। যে জায়গায় ইন্টারভিউ হয়েছিল, সেখানে কোনও চক বা ব্ল্যাকবোর্ড ছিল না।

Advertisement

৩০ জন ইন্টারভিউয়ারের আগে পরীক্ষার্থীদেরও বয়ান নেওয়া হয়েছিল হাই কোর্টে। সেখানে অনেকেই জানিয়েছিলেন, চক, ডাস্টার নিয়ে কী ভাবে পড়াবেন, তা অ্যাপটিটিউড পরীক্ষায় বলা হয়নি। অনেক পরীক্ষার্থী অভিযোগ করেছিলেন, তাঁদের অ্যাপ্টিটিউড পরীক্ষা হয়েছিল বারান্দায়। সেখানে কোনও ব্ল্যাকবোর্ড ছিল না। তার পরেই গত মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টের সার্ধশতবার্ষিকী ভবনের ন’তলায় ৩০ জন ইন্টারভিউয়ারের বয়ান নেওয়া হয়। আইনজীবী সূত্রে খবর, প্রত্যেক ইন্টারভিউয়ারকে আলাদা করে ডেকে তাঁদের কথা শোনেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ভয় পাওয়ার কারণ নেই বলে অভয় দেন তিনি। সেখানেই কেউ কেউ বিচারপতিকে জানান, পরীক্ষা নেওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে অবহিত ছিলেন না তাঁরা। সে দিন বিচারপতিকে ঠিক কী জানিয়েছিলেন তাঁরা, সেই বয়ানের নথিই সামনে এল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement