ইন্দিরার কথাতেই বার্তা প্রণব-অধীরের

প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর জন্মশতবর্ষ পালন উপলক্ষে রাজনৈতিক বার্তাই দিলেন কংগ্রেস নেতারা। প্রদেশ কংগ্রেসের আয়োজনে দিনভর চলল ইন্দিরা-স্মরণ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:১১
Share:

শ্রদ্ধা: ইন্দিরা গাঁধীর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, প্রদীপ ভট্টাচার্য (পাশে) ও সোমেন মিত্র (ডান দিকে) । রবিবার কলেজ স্ট্রিটে ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

কেউ করলেন নোট বাতিলের প্রতিবাদ। কেউ মনে করালেন দুঃসময়ে মনোবল না হারিয়ে ফিরে আসার গল্প। প্রতিবাদ হল কেন্দ্রীয় সরকারের উপেক্ষারও।

Advertisement

প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর জন্মশতবর্ষ পালন উপলক্ষে রাজনৈতিক বার্তাই দিলেন কংগ্রেস নেতারা। প্রদেশ কংগ্রেসের আয়োজনে দিনভর চলল ইন্দিরা-স্মরণ। প্রদেশ সভাপতির নেতৃত্বে শহরের রাস্তায় যেমন শান্তির জন্য দৌড়, বিধান ভবনে আলোচনাসভা হল, তেমনই আর এক বর্ষীয়ান নেতা সোমেন মিত্রের উদ্যোগে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে কৌশলে সরব হলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়।

দিল্লিতে রবিবার সকালে সনিয়া গাঁধী, মনমোহন সিংহ, শীলা দীক্ষিতদের সঙ্গে ইন্দিরার জীবনের উপরে বইপ্রকাশে হাজির ছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। তার পরেই কলকাতায় এসে ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটে বিধান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের আয়োজিত ইন্দিরা-স্মরণ অনুষ্ঠানে প্রণববাবু বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়ে ইন্দিরাজি বলেছিলেন, এমন কিছু বলতে নেই, যা আবার পরে ফিরিয়ে নিতে হয়!’’ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর স্মৃতিচারণ, এক বার সংসদে বাজেট পেশের সময়ে তাঁর উদ্দেশে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, তাঁরা কেন নোট বাতিল করছেন না? জোর গলায় অর্থমন্ত্রী জবাব দিয়েছিলেন, করব না! পরে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা তাঁকে ঘরে ডেকে পরামর্শ দেন, রাজনীতিতে এমন কিছু জোর গলায় বলে দেওয়া উচিত নয়, যা আবার পরে ফিরিয়ে নিতে হতে পারে! ব্যাখ্যায় না গেলেও সকলেরই ধারণা, প্রণববাবু কটাক্ষ করেছেন নরেন্দ্র মোদী জমানা এবং নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে।

Advertisement

কেন্দ্রীয় সরকার যে ইন্দিরার শতবর্ষ পালনে আগ্রহী হয়নি, তাকেও এ দিন বিঁধেছেন প্রণববাবু। বলেছেন, ‘‘কোন সরকার পালন করল কি করল না, বড় কথা নয়। বড় কথা হল, মানুষ ইন্দিরাকে স্মরণ করছে।’’ বিধান ভবনের সামনের মঞ্চে একই কথা বলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। একই মঞ্চে এক সুর ছিল প্রাক্তন অধ্যাপক অমল মুখোপাধ্যায় এবং দূরদর্শনের প্রাক্তন অধিকর্তা আনিস রফিরও।

অধীরবাবু অবশ্য ইন্দিরা-স্মরণের মোড়কে কংগ্রেস কর্মীদের লড়াই জারি রাখার বার্তা দিয়েছেন। জরুরি অবস্থার পরে নির্বাচনে হেরেও তিন বছরের মধ্যে যে ভাবে জনাদেশ নিয়ে ইন্দিরার প্রত্যাবর্তন ঘটেছিল, সেই কাহিনি বলেই অধীরবাবুর পরামর্শ, রাস্তায় একা হয়ে গেলেও এগিয়ে চলতে হবে। নিজেদের উপরে আস্থা অটুট রাখতে হবে।

কেন্দ্রের উপেক্ষার প্রতিবাদে কংগ্রেসের সঙ্গে সুর মিলে গিয়েছে তৃণমূলেরও। দলের মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘‘এখন সরকারের কংগ্রেসের নয়। তার মানে এই নয় যে, ইন্দিরাকে ভুলে গেলে চলবে! যাঁরা মানছেন না, তাঁদের ইতিহাস ক্ষমা করবে না।’’ উত্তর কলকাতা ইন্দিরা গাঁধী জন্মশতবার্ষিকী কমিটির আয়োজনে বাগবাজার গিরিশ মঞ্চ থেকে শোভাযাত্রা হয় খন্না মোড় (‘ইন্দিরা চক’) পর্যন্ত। মিছিলে যোগ দেন সাংসদ সৌগত রায় ও রাজ্যের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। আবার ১১৭ ও ১১৮ ওয়ার্ডের কংগ্রেস কর্মীরা দুঃস্থ মানুষের হাতে মশারি তুলে দিয়ে ইন্দিরা-স্মরণ করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement