প্রতীকী ছবি।
রায়গঞ্জ থেকে এক দুষ্কৃতী এসে বেলেঘাটার এক তরুণীকে গুলি করেছিল। সেই মামলার শুনানি শিয়ালদহ আদালতে চলছে। আদালত সূত্রের খবর, মামলার শুনানি বারবার স্থগিত হচ্ছে। কারণ ওই দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে রায়গঞ্জেও মামলা চলছে। আপাতত সেখানকার জেলে বন্দি সে। রায়গঞ্জ ও কলকাতার মধ্যে যাতায়াত এবং দুই আদালতে হাজিরা দেওয়ার ঝঞ্ঝাটেই স্থগিত হচ্ছে শুনানি।
এ রাজ্যে বেড়াতে এসে ধর্ষিতা হয়েছিলেন এক জাপানি তরুণী। ঘটনার পরে দেশে ফিরে গিয়েছেন তিনি। তরুণী রাজ্যের বাসিন্দা না হওয়ায় মামলার দ্রুত বিচার করা যায়নি।
কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন নিম্ন আদালতে এমন মামলার পাহাড় জমে রয়েছে। অনেক সময়েই অভিযোগকারীরা মামলার দ্রুত শুনানির আর্জি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। কিন্তু আইনজীবীদের অনেকেই বলছেন, এ সব কারণে বিচারপ্রক্রিয়া দেরি হচ্ছে। এ কথা মাথায় রেখে এ বার ব্যাঙ্কশাল, আলিপুর এবং শিয়ালদহ আদালতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানির ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। আদালত এবং পুলিশ সূত্রের খবর, এর আগেও কয়েকটি মামলায় ভি়ডিও কনফারেন্সে শুনানি হয়েছে। কিন্তু কোনও
স্থায়ী পরিকাঠামো ছিল না। এ বার সেই পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই তিনটি আদালতে ভি়ডিও কনফারেন্সের জন্য একটি করে বিশেষ কক্ষ তৈরি করা হচ্ছে।
সেখানে ক্যামেরা, কম্পিউটার, লাউড স্পিকার, ইন্টারনেট সংযোগের মতো প্রয়োজনীয় জিনিস থাকবে। আদালত সূত্রের খবর, ওই বিশেষ কক্ষে অভিযুক্ত, বিচারক এবং সাক্ষ্যদানকারী ছাড়া কেউ থাকবেন না। বিচার চলাকালীন ক্যামেরায় পুরো ঘর দেখা যাবে। বিচারক ও মামলায় যুক্ত আইনজীবীরা আলোচনার মাধ্যমে সেই পরিকাঠামো ব্যবহার করতে পারবেন।
লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘তিন আদালতেই দ্রুত ওই বিশেষ কক্ষ তৈরি করা হবে। ইতিমধ্যেই আদালতের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।’’ পাশাপাশি পুলিশ জানিয়েছে, ভি়ডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানি পর্ব নতুন নয়। গত মাসেই আলিপুর আদালতে এক আইরিশ তরুণীকে ধর্ষণের মামলার শুনানি হয়েছিল ভি়ডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে। গত সপ্তাহে নিউ মার্কেট থানা এলাকায় এক জাপানি তরুণীর ধর্ষণের মামলায়, সরকারি কৌঁসুলি ভি়ডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অভিযোগকারীর সাক্ষ্য নেওয়ার আবেদন করেন। ওই মামলায় অভিযুক্তদের আইনজীবী ফজলে আহমেদও জানান, ভি়ডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানি হলে দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি হবে।
শিয়ালদহের দায়রা আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি অসীম কুমারের মতে, ‘‘ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানি চালু হলে বিশেষ ক্ষেত্রে দ্রুত বিচার শেষ হবে। আসামিদের হাজির করানো নিয়ে সময় ও অর্থের অপচয় কমবে।’’ আইনজীবীদের একাংশ জানান, ভিডিও কনফারেন্স চালু হলে গুরুত্বপূর্ণ মামলার আসামিদের নিয়ে যাতায়াতের ঝুঁকি কমবে।