কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
যৌন নির্যাতন বা পকসো মামলায় নির্যাতিতা বা নিগৃহীতের ছবি এবং ভাইরাল ভিডিয়ো সিল করা মুখবন্ধ খামে কেস ডায়েরির সঙ্গে আদালতে জমা দিতে হবে তদন্তকারীকে। একই সঙ্গে, ওই ভিডিয়ো বা ছবি নির্যাতিতার হাতে তুলে দিতে হলে তা গোপনীয়তা বজায় রেখে করতে হবে বলে নির্দেশ জারি করেছে লালবাজার। সূত্রের খবর, পুলিশের শীর্ষ মহলের জারি করা এই নির্দেশ অমান্য করা হলে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারীর বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
সূত্রের খবর, রাজ্য পুলিশের এডিজি (লিগ্যাল)-এর জারি করা ওই নির্দেশ বুধবার সব থানায় পাঠানো হয়েছে। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন)-এর তরফে পাঠানো ওই নির্দেশিকা কঠোর ভাবে মেনে চলতে বলা হয়েছে থানাগুলিকে। একই সঙ্গে তদন্তকারীদের কাছে ওই নির্দেশের ঠিক ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্যও থানার আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এমন নির্দেশ কেন? সূত্রের খবর, কিছু দিন আগে নদিয়ার কৃষ্ণনগরের সাইবার ক্রাইম থানা একটি যৌন নির্যাতনের মামলায় নির্যাতিতার ছবি কেস ডায়েরির সঙ্গে জুড়ে, কোনও গোপনীয়তা ছাড়াই কলকাতা হাই কোর্টে জমা দিয়েছিল। যা দেখে ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। এর পরেই আদালত ওই ধরনের মামলায় বাজেয়াপ্ত হওয়া ছবি এবং ভাইরাল ভিডিয়ো সিল করা মুখবন্ধ খামে আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে সেই নির্দেশ প্রতিটি থানায় জানানোর জন্য নির্দেশিকাও জারি করতে বলেন বিচারপতি। উল্লেখ্য, কিছু দিন আগেই পকসো বা যৌন নির্যাতনের মামলায় নির্যাতিতের নাম কেস ডায়েরিতে উল্লেখ করা যাবে না বলে নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। কোনও ভাবেই নির্যাতিতার নাম যাতে প্রকাশ্যে না আসে, সে জন্যই ওই নির্দেশ জারি করেছিল লালবাজার।
পুলিশের একাংশের মতে, কেস ডায়েরি বা সিডি আদালতে জমা দেওয়ার আগে বা পরে বিভিন্ন জনের কাছে যায়। ফলে নির্যাতিতার ওই ছবি বা ভিডিয়ো প্রকাশ্যে চলে আসার আশঙ্কা থেকে যায়। সেই আশঙ্কা নির্মূল করতেই কলকাতা হাই কোর্ট কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এই নির্দেশ অমান্য করা হলে তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে বলে পুলিশের শীর্ষ মহল থেকেও লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।