Cyclone Dana

আশঙ্কা, প্রস্তুতি দুই-ই ছিল, তবে বাংলায় তেমন প্রভাব পড়ল না ‘ডেনা’র! চলছে বৃষ্টি, সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়াও

আশঙ্কা থাকলেও এই রাজ্যে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি ‘ডেনা’। এমনকি রাজ্যের উপকূলবর্তী দুই জেলা পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকেও বড় কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর আসেনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:০৭
Share:

শুক্রবার সকালে রাজ্যের উপকূলভাগের বিভিন্ন এলাকার ছবি। —নিজস্ব চিত্র।

মধ্যরাতে স্থলভাগে আছড়ে পড়া ঘূর্ণিঝড় কতটা ক্ষয়ক্ষতি ঘটাবে, তা নিয়ে আতঙ্ক ছিলই।ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধি নজরে রাখতে সারা রাত নবান্নের কন্ট্রোল রুমে বসে জায়ান্ট স্ক্রিনে নজর রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ‘ডেনা’র ‘ল্যান্ডফলের’ প্রক্রিয়া এখনও শেষ না হলেও সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে প্রশাসন। কারণ আশঙ্কা থাকলেও এই রাজ্যে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি ‘ডেনা’। এমনকি রাজ্যের উপকূলবর্তী দুই জেলা পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকেও বড় কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর আসেনি।

Advertisement

তবে মধ্যরাত থেকেই রাজ্যের উপকূলবর্তী অংশগুলোয় তো বটেই, দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশেও ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। শুক্রবার ভোর থেকে নাগাড়ে বৃষ্টি হচ্ছে কলকাতাতেও। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দিনভর বৃষ্টি চলবে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। অতি ভারী বৃষ্টি হবে পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায়।

অন্য দিনের তুলনায় ফাঁকা হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ড। —নিজস্ব চিত্র।

উপকূলবর্তী জেলা হওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতেও প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছিল জেলা প্রশাসন। সমুদ্র তীরবর্তী নিচু এলাকাগুলি থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বহু মানুষকে। আশঙ্কাকে সত্যি করে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকেই দিঘায় সমুদ্র অশান্ত ছিল। শুক্রবার সকালে সমুদ্র অনেকটাই শান্ত হয়। তবে জোরালো বৃষ্টি হচ্ছে দিঘা, শঙ্করপুর এবং তাজপুরে। বইছে ঝোড়ো হাওয়াও। এখনও পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুর থেকে বড় কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর আসেনি।

Advertisement

একই পরিস্থিতি আর এক উপকূলবর্তী জেলা দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও। রাত ৩টের পর সুন্দরবন এবং সংলগ্ন এলাকায় ঝড় শুরু হলেও তা খুব বেশি ক্ষণ স্থায়ী হয়নি বলে জানা গিয়েছে। তবে সেখানে ভারী বৃষ্টি চলছে। বইছে ঝোড়ো হাওয়াও। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে সুন্দরবনের একাধিক নদীঘাটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। গদখালি, গোসাবা, দয়াপুর, চুনোখালি, ঝড়খালি, শঙ্করপুর-সহ বিভিন্ন ফেরিঘাটে প্রশাসনের নির্দেশ অনুযায়ী শুক্রবার সকালেও ফেরি চলাচল বন্ধ। তবে অনেক ফেরিঘাটে যাত্রীরা দাঁড়িয়ে আছেন।

বাতিল বহু ট্রেন। ‘ডেনা’-আতঙ্কে ফাঁকা হাওড়া স্টেশনও। শুক্রবার সকালে। —নিজস্ব চিত্র।

তবে দমকা হাওয়ায় গঙ্গাসাগরের বিভিন্ন এলাকায় গাছ পড়ে কিছু রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে যায়। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা গাছ কেটে সেই সমস্ত রাস্তা পরিষ্কার করছেন। সকালে সাগরের তবলাহাটে বাঁধ সারাইয়ের কাজে এলাকার মহিলারাও হাত লাগান।

‘ডেনা’র প্রভাবে ঘণ্টায় ৬০-৭০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস ছিল কলকাতায়। আূবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসের কথা মাথায় রেখে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল কলকাতা পুরসভা। সারা রাত পুরসভার কন্ট্রোল রুমে বসে পরিস্থিতির উপরে নজর রাখেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ভোর থেকে শহরে বৃষ্টি এব‌ং ঝোড়ো হাওয়া শুরু হলেও, ‘ডেনা’ খুব বেশি প্রভাবশালী হতে পারেনি। আগেই পূর্ব রেলের তরফে বেশ কয়েকটি ট্রেন বাতিল করা হয়েছিল। সকালে হাওড়া স্টেশনে হাতেগোনা কয়েক জন ছিলেন। অন্য দিনের তুলনায় বাসও ছিল সংখ্যায় অনেক কম। তবে পরিস্থিতি মোটের উপরে অনুকূল দেখে অনেক নিত্যযাত্রীকেই সকালের ট্রেনে দেখা গিয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ওড়িশার ভুবনেশ্বরের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে হলদিয়ায়। ভুবনেশ্বরে ওই সময়ের মধ্যে ২০.৪ মিলিমিটার। হলদিয়ায় হয়েছে ৬৩ মিলিমিটার। ওই সময়ের মধ্যে ওড়িশার বালেশ্বরে ৪৮ মিলিমিটার, পারাদ্বীপে ৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে চাঁদবালিতে। সেখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৪৫ মিলিমিটার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement