Polls are not held within a certain time

করোনা-আতঙ্কে ভোট পিছনোয় বহু পুরসভায় বসতে পারে প্রশাসক

কবে নির্বাচন হবে? তা এখনই নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না রাজ্য নির্বাচন কমিশন। গোটা বিষয়টি নির্ভর করছে পরিস্থিতির উপর।

Advertisement

সোমনাথ মণ্ডল

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২০ ২০:৩৯
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।

আবারও প্রশাসকের হাতে যাওয়ার পথে একগুচ্ছ পুরসভা। করোনাভাইরাসের আতঙ্কের জেরে পুরসভাগুলির নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে এই সম্ভাবনাই জোরদার হচ্ছে।কারণ, রমজান মাসের হিসাব ধরলে মে মাসের শেষের দিকে অধিকাংশ পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। তার আগে ভোট না করতে পারলে, শেষ পর্যন্ত অধিকাংশ পুরসভায় প্রশাসক বসাতে হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Advertisement

করোনাভাইরাসের আতঙ্কের জেরে পিছিয়ে গিয়েছে পুরসভার নির্বাচন। কবে নির্বাচন হবে? তা এখনই নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না রাজ্য নির্বাচন কমিশন। গোটা বিষয়টি নির্ভর করছে পরিস্থিতির উপর। সোমবার এ বিষয়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠক সেরে নিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস। এমন পরিস্থিতিতে ভোটের পক্ষে নয় কোনও দলই। তবে তাদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার ভোটের দিন ক্ষণ নিয়ে টালবাহানা করছিলই। এখন করোনার দোহাই দিয়ে, ভোট না করিয়ে অধিকাংশ পুরসভায় প্রশাসকও বসিয়ে দিতে পারে!

বাম-কংগ্রেস থেকে বিজেপি এক সুরেই এ বিষয়ে তৃণমূলকে বিঁধেছে। এ দিন বৈঠকের আগে কংগ্রেসের প্রদীপ ভট্টাচার্যের হাত ধরে কমিশনে ঢুকতে দেখা যায় সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীকে। সুজন বলেন, “এর আগে তো করোনাভাইরাস নিয়ে এমন যায় যায় রব ওঠেনি। কেন দু’বছর ধরে ১৭টি পুরসভায় ভোট হল না?” পুরভোট নিয়ে সরকারকে তোপ দেগেছেন বিজেপির জয়প্রকাশ মজুমদারও। তিনি বলেন, “আমরা এখনই নির্বাচনের জন্য তৈরি। এই সরকার তো ভোট নিয়ে ছেলেখেলা করছিল। তবে প্রশাসক বসবে কি বসবে না, সে ব্যাপারে আইনে যা আছে তাই হবে। মানুষ যাতে পুর পরিষেবা পান, আমরা তার পক্ষে।”

Advertisement

আরও পড়ুন: ভোট পিছনোয় আপত্তি না করেও সরকার-কমিশনকে তোপ বিরোধীদের

তৃণমূলের সুব্রত বক্সীর কথায়: “যা পরিস্থিতি তাতে ভোট আপাতত হচ্ছে না। তবে আমরা কমিশনকে জানিয়েছি, ভোটপ্রক্রিয়া যেন বন্ধ না হয়।”

রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, রমজান মাস শেষ হওয়ার আগে ভোট হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। সামগ্রিক পরিস্থিতি এবং রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের উপর তা নির্ভর করবে। তবে এ রাজ্যে রমজান মাসে ভোট হওয়ার ইতিহাস রয়েছে। কিন্তু যদি তা না হয়, তা হলে আইন অনুযায়ী প্রশাসক নিয়োগ হতে পারে।

আরও পড়ুন: রাজ্যে জারি মহামারী আইন, ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ

কমিশনের একটি সূত্রের দাবি, এ বার জুন মাসের প্রথম সপ্তাহের পর দু’দফায় ভোট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে রাজ্য কী ভাবছে, তার উপর গোটা বিষয়টি নির্ভর করবে। করোনাভাইরাস নিয়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি না হলে, এখনই ভোট করাতে কোনও অসুবিধা ছিল না। এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে কলকাতা ও হাওড়া পুরসভার ভোটের দিন প্রায় নিশ্চিত হয়েও গিয়েছিল।

কলকাতা পুরসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৮ মে। হাওড়া পুরসভায় প্রশাসক বসিয়ে কাজ চলছে। তা নিয়ে বিরোধীরা দীর্ঘ দিন ধরেই সরব। দুবরাজপুর, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুরের মতো রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ১৭টি পুরসভার মেয়াদও ফুরিয়ে গিয়েছে। ওই সব পুরসভা-সহ মোট ১১২টি পুরসভার ভোট হওয়ার কথা ছিল এপ্রিল থেকে। এর মধ্যে আসানসোল এবং বিধাননগর পুরসভার মেয়াদ আগামী অক্টোবরে শেষ হওয়ার কথা। ওই দু’টি পুরসভার নির্বাচনও একই সঙ্গে হওয়ার চিন্তাভাবনা চলছিল।

করোনাভাইরাস জনিত এই পরিস্থিতি গোটা হিসেবনিকেশই উল্টে দিয়েছে। ১১২টি পুরসভায় কত দফায় ওকবে ভোট হবে, সে বিষয়টি রাজ্যের উপরেই নির্ভর করছে। তবে কয়েকটি পুরসভা বাদ দিলেপ্রায় সব পুরসভার মেয়াদ মে মাসে শেষ হওয়ায় রাজ্যের ভূমিকা কী হবে, সে দিকে লক্ষ রাখছে বিরোধী দলগুলি।

কমিশনের এক আধিকারিক বলেন, “ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল অ্যাক্ট, ১৯৯৩-এর আইন অনুযায়ী ওই পুরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার একদিন আগে নির্বাচন করতে হবে। তা ধরলে, মে মাসের মধ্যে ওই সব পুরসভার ভোট শেষ করতে হবে।”

রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস বলছেন, “এ সব এখন প্রাথমিক স্তরে। আপাতত ভোট হচ্ছে না। এ বিষয়ে আলোচনা চলবে। রাজ্যের সঙ্গে ভোট পিছনো নিয়ে কথা হয়েছে, এর থেকে বেশি কিছু বলা যাবে না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement