প্রতীকী ছবি
নিজের খাসতালুকেই ব্রাত্য হলেন তিনি। দলের কর্মী সভায় ডাক পেলেন না হুমায়ুন কবীর। গত সাত বছরে ক্রমাগত দল বদলে চলা হুমায়ুন শেষতক ফিরেছিলেন পুরনো দল তৃণমূলে। দলের অন্দরের খবর, ফিরে এলেও, গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীর প্রত্যাবর্তন যে রেজিনগর এবং শক্তিপুরের তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ ভাল ভাবে নেননি, গত কয়েক মাসে বিভিন্ন ঘটনায় তা সামনে এসে পড়েছে। সেই তালিকায় নয়া সংযোজন, হুমায়ুনকে কর্মী সভায় আহ্বান না-জানানো।
দলীয় নেতৃত্বের অনেকেই মনে করছেন, এই ঘটনায় হুমায়ুন এবং স্থানীয় বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরীর ‘মধুর’ সম্পর্ক ফের স্পষ্ট হয়ে গেল। ভোটের প্রস্তুতিতে এ ঘটনা দলের ঐক্যের প্রশ্নে য়ে বড় ধাক্কা তা মেনে নিচ্ছেন তাঁরা। রবিউল আলম অবশ্য দাবি করেছেন, “এই সভা বুথ স্তরের জনা কয়েক কর্মীকে ডাকা হয়েছিল। বড় নেতাদের কাউকেই তো ডাকা হয়নি। এতে সমস্যার কী আছে।” যা শুনে হুমায়ুন অবশ্য বলছেন, ‘‘ব্লক কমিটি বলেই কিছু নেই, সেখানে বুথ কমিটির কোন অস্তিত্ব কোথায়! রবিউল আলম নিজের লোকজনকে গুরুত্ব দিয়েছেন, দলের ভাল চাননি। তাই এই সভায় আমার ডাক আসেনি।” খবরটা জানতে পেরেছেন দলের জেলা সভাপতি আবু তাহের খান-ও। তিনি বলেন, ‘‘হুমায়ুন তো দলের বিভিন্ন জায়গায় সভায় ডাক পাচ্ছে। ওর নিজের এলাকায় কেন ওকে ডাকা হল না অবশ্যই খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
রবিবার বিকেলে রেজিনগর বিধানসভার বুথকর্মী সন্মেলন ছিল রামপাড়া-মাঙ্গনপাড়া হাইস্কুলে। সেখানে প্রতি বুথ থেকে ৬-৭ জন করে কর্মীকে ডাকা হয়েছিল। মোট ২৭৫টি বুথের প্রায় ২,২০০ কর্মীকে নিয়ে এ দিনের সভায় ব্লক নেতৃত্বের সঙ্গে জেলা নেতৃত্বেরও অনেকে ছিলেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। আগামী বিধানসভার আগে প্রস্তুতি বৈঠকে দলের ঐক্যবদ্ধ চেহারাটা তুলে ধরতেই মূলত এ দিনের সভা। কিন্তু সেই সভাকে ঘিরেই দলীয় কোন্দল একেবারে উঠোনে মুখ থুবড়ে পড়ল!
এ দিন প্রকাশ্য সভায় নাম না করে হুমায়ূনকে ‘রথি মহারথী কালিদাস’ বলে সম্বোধন করে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বেলডাঙা ২ ব্লক নেতৃত্ব। যা শুনে প্রাক্তন বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুনের পাল্টা জবাব, “আমি দলের সাধারণ কর্মী হিসাবে দলে যোগ দিয়েছি। কিন্তু আমার বিধানসভা এলাকার কর্মী সন্মেলনে আমাকে বাইরে রাখা হল, এটাই খারাপ।” দলের অনেকেই মনে করছেন, এর ফলে এলাকায় উত্তেজনা বাড়বে। এমনকি নির্বাচনী ফলেও এর প্রভাব পড়তে বাধ্য।