নলহাটিতে উদ্ধার বিপুল পরিমান বিস্ফোরক। —নিজস্ব চিত্র।
ভিন্ রাজ্য থেকে এনে মজুত করা হচ্ছিল প্রচুর পরিমাণে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট এবং জিলেটিন স্টিক। গুদামে ঢোকার আগেই হানা দেয় পুলিশ। জিলেটিন স্টিক, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের সঙ্গে পাওয়া গিয়েছে বিপুল পরিমাণ ডিটোনেটরও।
বীরভূম জেলার ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া বাহাদুরপুর গ্রামের ঘটনা। সেখানেই একটি বাড়িতে মজুত করা হচ্ছিল কয়েক কুইন্টাল অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। তল্লাশি শুরু হতেই পাওয়া যায় ৫০ হাজার ডিটোনেটর ও ১১ হাজার জিলেটিন স্টিকের। বাড়ির মালিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, দু’টি গাড়ি করে রাতের অন্ধকারে ঝাড়খণ্ড থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল বিপুল পরিমাণ এই বিস্ফোরক তৈরির কাঁচামাল। গাড়ি পাওয়া গেলেও তার চালকদের হদিশ এখনও পাওয়া যায়নি। কী কারণে বিপুল এই বিস্ফোরকের কাঁচামাল মজুত করা হচ্ছিল তা নিয়ে এখনও অন্ধকারে পুলিশ। তবে তদন্তকারীদের একাংশের ধারণা, নলহাটি এবং সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে প্রচুর পরিমান বৈধ এবং অবৈধ পাথর খাদান। সেখানে এই ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়।
আরও পড়ুন
বদলে গিয়েছে ম্যাথিউয়ের মোবাইল! নারদ তদন্তে জট কাটাতে পরিবর্তন তদন্তকারী দলে
উদ্ধার হওয়া অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের বস্তা। —নিজস্ব চিত্র।
কিন্তু, নাশকতার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিতে পারছেন না তদন্তকারীরা। তার দু’টি কারণ। এর আগে বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণের তদন্তের সময় দেখা গিয়েছিল, জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) জঙ্গিদের একটা বড় ঘাঁটি বীরভূম জেলার এই অঞ্চল। পরবর্তী সময়েও একধিক বার নলহাটি এবং সংলগ্ন এলাকায় ইসলামিক জঙ্গি কার্যকলাপের হদিশ মিলেছে। সে রকমই কোনও সংগঠন কোনও বড়সড় নাশকতার জন্য এই বিস্ফোরক তৈরির কাঁচামাল ওই গ্রামে মজুত করছিল, সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিতে পারছেন না শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকরা।
আরও পড়ুন
‘ব্যান পিরিয়ড’ বাজারে ঢালাও সামুদ্রিক মাছ!
নলহাটির বাহাদুপুরে উদ্ধার জিলেটিন স্টিক, ডিটোনেটর, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। —নিজস্ব চিত্র।
সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের এসটিএফ মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ এলাকা থেকে জেএমবি জঙ্গিদের একটি নতুন মডিউলের হদিশ পেয়েছিল। যারা বুদ্ধগয়াতে দলাই লামার সফরের সময় আইইডি প্ল্যান্ট করেছিল। এদের একটি মডিউলের হদিশ মিললেও অন্য মডিউলের সদস্যরা গা ঢাকা দিয়েছিল সেই সময়। রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষ গোয়েন্দা কর্তা বলেন, “এ রকম কোনও মডিউল এ রাজ্যে বা অন্য কোনও রাজ্যে নাশকতার জন্যই এই কাঁচামাল মজুত করছিল, এমনটাও হতে পারে। সেই কারণে গাড়ির চালক এবং ঠিক কোথা থেকে এই কাঁচামাল কেনা হয়েছিল সেটা খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা চলছে।”