রাস্তা তৈরি নিয়ে হুমকির অভিযোগ তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে

গ্রামের মধ্যে রাস্তা তৈরিকে কেন্দ্র করে এক গ্রামবাসীকে হুমকি দেওয়ার ও সামাজিক বয়কটের অভিযোগ উঠল পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির দাদপুর থানার পোলবা-দাদপুর ব্লকের সাটীথান পঞ্চায়েতের দামপুর গ্রামে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দামপুর গ্রামে এক কামরার একতলা বাড়িতে ঘরে স্ত্রী ও পুত্র নিয়ে আসফার উদ্দিনের সংসার। বাড়ির কাছেই জমিতে চাষ আবাদ করেন। বাড়ি লাগোয়া বেশ কিছুটা ফাঁকা জমি রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দাদপুর শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:১৮
Share:

নিজেদের অবস্থা জানাতে গিয়ে কান্না সাহানাজের।-নিজস্ব চিত্র।

গ্রামের মধ্যে রাস্তা তৈরিকে কেন্দ্র করে এক গ্রামবাসীকে হুমকি দেওয়ার ও সামাজিক বয়কটের অভিযোগ উঠল পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির দাদপুর থানার পোলবা-দাদপুর ব্লকের সাটীথান পঞ্চায়েতের দামপুর গ্রামে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দামপুর গ্রামে এক কামরার একতলা বাড়িতে ঘরে স্ত্রী ও পুত্র নিয়ে আসফার উদ্দিনের সংসার। বাড়ির কাছেই জমিতে চাষ আবাদ করেন। বাড়ি লাগোয়া বেশ কিছুটা ফাঁকা জমি রয়েছে। গ্রামে যাতায়াতের জন্য সম্প্রতি একটি রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা করে পঞ্চায়েত। সেই মতো জমি নেওয়ার কাজ শুরু করে তারা। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে আসফার উদ্দিনকে জমি দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানোর পাশপাশি তাঁর বাড়িও ভাঙা হবে বলে জানিয়ে দেয় পঞ্চায়েত। আসফার উদ্দিন তাতে রাজি হননি। তিনি পঞ্চয়েতকে জানান, রাস্তাটা বাড়ির পাশ দিয়ে তৈরি হলে তাঁর বাড়ি ভাঙা পড়বে না। সে জন্য যতটা জমি লাগবে তিনি দিতে রাজি আছেন। কিন্তু পঞ্চায়েত তাতে রাজি হয়নি।”

আসফারের অভিযোগ, এর পর থেকেই প্রধান মন্তেশ্বর সামন্ত তাঁকে হুমকি দিতে থাকেন। অনেক অনুরোধ করেও কাজ না হওয়ায় তিনি প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। স্থানীয় বিধায়ক থেকে জেলা নেতৃত্ব সকলকেই সমস্ত ঘটনা জানান। আসফারের অভিযোগ, তার পর থেকেই পঞ্চায়েত প্রধানের নেতৃত্বে স্থানীয় তৃণমূলের কয়েকজন তাঁর জমিতে চাষ করা বন্ধ করে দেয়। পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এর পরেও তিনি বাড়ি ভাঙার অনুমতি না দেওয়ায় তাঁকে সামাজিক বয়কট করা হয়। স্থানীয় মসজিদে তাঁকে নমাজ পড়তে দেওয়া হয় না। বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। বাড়ির সামনে গাছের কাটা ডাল ফেলে যাতায়াতের পথও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

Advertisement

এ ব্যাপারে জেলার পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন আফসারের স্ত্রী সাহানাজ। জেলার পুলিশ সুপার বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। তদন্তে করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সাহানাজ খাতুন বলেন, “আমাদের বাড়ি বাদ দিয়ে ফাঁকা জমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও পঞ্চায়েত প্রধান রাজি হননি। তিনি বাড়ি ভেঙে রাস্তা করবেন ঠিক করেছেন। তাতে আমরা যে গৃহহীন হয়ে পড়ব তা বুঝতেই চাইছেন না। উল্টে প্রধানের গুন্ডা বাহিনী আমাদের প্রাণে মারার হুমকি দিচ্ছে।”

মন্তেশ্বরবাবু অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “রাস্তা তৈরি নিয়ে অন্য গ্রামবাসীদের সঙ্গে আসফারের দ্বন্দ্ব। পঞ্চায়েতের সঙ্গে কোনও ঝগড়া হয়নি। এখানে তৃণমূল কংগ্রেস বা পঞ্চায়েত প্রধানের কোনও ভূমিকা নেই।”

জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি। দলের তরফে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। দলের কেউ এ কাজে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে রাজ্য নেতৃত্বকেও সব জানানো হবে।”

সদর মহকুমা শাসক সুদীপ সরকার বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। পোলবার বিডিও দফতরে দু’পক্ষকে ডেকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement