মুণ্ডেশ্বরীতে ঝাঁপিয়ে ডুবন্ত যাত্রীদের বাঁচালেন গ্রামবাসী

গ্রামবাসীদের তত্‌পরতায় বড় বিপদের হাত থেকে রক্ষা পেলেন হাওড়ার জয়পুরের কুলিয়া ঘাটের কাছে মুণ্ডেশ্বরী নদীতে উল্টে যাওয়া একটি নৌকার বেশ কিছু যাত্রী। রবিবার বিকেলে ওই দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রামবাসীরা ঝাঁপিয়ে পড়ে যাত্রীদের উদ্ধার করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জয়পুর শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:১৮
Share:

ভাঙা সাঁকো থেকেই চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: সুব্রত জানা।

গ্রামবাসীদের তত্‌পরতায় বড় বিপদের হাত থেকে রক্ষা পেলেন হাওড়ার জয়পুরের কুলিয়া ঘাটের কাছে মুণ্ডেশ্বরী নদীতে উল্টে যাওয়া একটি নৌকার বেশ কিছু যাত্রী। রবিবার বিকেলে ওই দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রামবাসীরা ঝাঁপিয়ে পড়ে যাত্রীদের উদ্ধার করেন।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কুলিয়াঘাটের উল্টো দিকেই জয়পুরের কাশমলি। মাস খানেক আগে নদীর উপরে সাঁকো তৈরি হওয়ায় নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। দিন তিনেক আগে বালিবোঝাই একটি নৌকার ধাক্কায় সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় ফের নৌকা চলাচল শুরু হয়। এ দিন বিকেল ৪টে নাগাদ নৌকাটি যাত্রী নিয়ে যাওয়ার সময়ে জোয়ারের টানে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভেঙে পড়া ওই সাঁকোতে ধাক্কা লেগে উল্টে যায়। যাত্রীদের কেউ কেউ বাঁচার জন্য সাঁকোর বাঁশ আঁকড়ে ধরেন। তবে, সবাই তা পারেননি। তাঁরা কার্যত হাবুডুবু খেতে থাকেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকটি শিশু এবং মহিলাও ছিলেন।

চোখের সামনে ওই দৃশ্য দেখে পাড়ে থাকা জনা পনেরো গ্রামবাসী সঙ্গে সঙ্গে জলে ঝাঁপিয়ে পড়েন। যাত্রীদের সকলকেই পাড়ে তুলতে সমর্থ হন তাঁরা। প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ কেউ মাঝিকে ধরে দু’ঘা দেন। পরে জয়পুর থানার পুলিশ আসে। স্থানীয় বিধায়ক অসিত মিত্র এবং এসডিপিও (উলুবেড়িয়া) শ্যামল সামন্তও ঘটনাস্থলে চলে আসেন।

Advertisement

উদ্ধারকারীদের মধ্যে ছিলেন কাশমলির বাসিন্দা দীনেশচন্দ্র মণ্ডল, অমিত দলুই। তাঁরা বলেন, “জলে খুব স্রোত ছিল। অতগুলো মানুষ হাবুডুবু খাচ্ছেন, তা দেখে কি হাত গুটিয়ে বসে থাকা যায়! সবাই মিলে তাই জলে ঝাঁপাই। কপাল ভাল সবাই রক্ষা পেয়েছেন।” বিধায়ক গ্রামবাসীদের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন “ওঁরা জীবন বাজি রেখে বড় বিপদ আটকেছেন।” এসডিপিও জানিয়ে দেন, সাহসিকতার জন্য গ্রামবাসীদের পুরস্কৃত করার কথা চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

কুলিয়াঘাট থেকে কাশমলি ঘাট পর্যন্ত একটি সেতুর দাবি দীর্ঘদিনের। এই ঘটনার পরে ওই দাবি আরও জোরালো হয়েছে। কংগ্রেস বিধায়ক অসিতবাবু বলেন, “এখানে পাকা সেতু সত্যিই দরকার। প্রশাসনের কাছে বার বার এ নিয়ে বলেছি। আবারও বলব।”

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, নিরাপত্তার কথা না ভেবে নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ করা হয়। তাতে সব সময়েই দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। এ দিনও নৌকায় বাড়তি যাত্রী ছিল। ঘাটের ইজারাদার শেখ লালচাঁদ অবশ্য দাবি করেন, “অনেক লোকই জোর করে নৌকায় ওঠেন। বারণ শোনেন না। তবে, এ বার আমরা আরও সতর্ক থাকব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement