তাজমহল ঘোরানোর নাম করে এক নাবালিকা ও তার মাকে নিয়ে দিল্লি গিয়েছিলেন পড়শি। অভিযোগ, সেখানেই মেয়েটিকে মোটা টাকার বিনিময়ে হরিয়ানায় এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন পড়শি। এমনকী, প্রতি মুহূর্তে খুনের হুমকি দিয়ে ওই নাবালিকার মায়ের মুখ বন্ধ করে রাখা হয় বলেও অভিযোগ।
বছর দুয়েক আগে নারী পাচারচক্রের হাতে পড়ে এমন ভাবেই চরম দুর্ভোগ ও অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছিল বালির ছোট দুর্গাপুরের এক পরিবারকে। অবশেষে এক সপ্তাহ আগে সমস্ত হুমকিকে অগ্রাহ্য করে হরিয়ানায় গিয়ে চার মাসের বাচ্চা-সহ মেয়েটিকে নিয়ে চলে আসেন তার মা। এর পরে তিনি হাওড়া আদালতের এক আইনজীবির সহযোগিতায় শুক্রবার রাতে নিশ্চিন্দা থানায় পড়শি মহিলার নামে অভিযোগ দায়ের করেন। শনিবার ভোরে পুলিশ আমিনা বিবি নামে ওই মহিলাকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ছোট দুর্গাপুরের বাসিন্দা বছর ষোলোর মেয়েটির পাশের বাড়িতেই থাকতেন আমিনা বিবি। অভিযোগ, দিল্লিতে আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তাজমহল দেখানোর জন্য মাঝেমধ্যেই তিনি লোভ দেখাতেন ওই নাবালিকার পরিবারকে। দরিদ্র পরিবারের মা ও মেয়ে এক সময়ে দিল্লি যেতে রাজি হয়ে যান। সেখান থেকেই কাউকে না জানিয়ে ওই নাবালিকাকে নিয়ে পানিপথে চলে যান আমিনা। নাবালিকার মা বলেন, “আমাকে বলেছিল মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সে কথা কাউকে বললে আমাকে ও আমার ছেলেকে প্রাণে মেরে দেবে বলে ভয় দেখাতেন আমিনা।” ওই মেয়েটির অভিযোগ, প্রতিনিয়ত নেশা করে তার উপরে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করত ওই ব্যক্তি। একটি ঘরে সব সময়ে আটকে রাখা হত। মেয়েটির কথায়, “ছেড়ে দেওয়ার কথা বললে লোকটা টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলত।”
হাওড়া আদালতের আইনজীবি সুজিত চট্টোপাধ্যায় জানান, এক সপ্তাহ আগে কোনও মতে মেয়ের ঠিকানা জোগাড় করে হরিয়ানায় পৌঁছন তার মা। চার মাসের নাতনি-সহ মেয়েকে তিন দিনের জন্য কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য এক প্রকার জোর করেন তিনি। এর পরেই দুই দিন আগে বালিতে পৌঁছে হাওড়া আদালতে গিয়ে ইতস্তত ভাবে ঘোরাগুরি করছিলেন মা ও মেয়ে। তখনই সুজিতবাবুর সঙ্গে পরিচয় হয়। তিনিই পুলিশের কাছে পাঠিয়ে আমিনা বিবির নামে অভিযোগ দায়ের করান। সুজিতবাবু বলেন, “এত ক্ষতি যারা করেছে, তাদের শাস্তি হওয়া দরকার। ওঁদের সব রকমভাবে সাহায্য করব।”