কর্তারাই তেলচোর বলে অভিযোগ তুলে মৌড়িগ্রামে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন বা আইওসি-র ডিপোয় কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরু হয়েছিল। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিল বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া তৃণমূলের ট্যাঙ্কার অ্যাসোসিয়েশন। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ফের ওই ডিপোয় কাজ শুরু করে দিয়েছেন পেট্রোল ও ডিজেল ট্যাঙ্কার চালক ও খালাসিরা।
ট্যাঙ্কার অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য, আন্দোলনের নামে কাজ বন্ধ করা যাবে না বলে দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের নির্দেশ এবং ট্যাঙ্কারের তেল অন্যত্র মাপার ব্যাপারে আইওসি-কর্তৃপক্ষের সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরেই আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। খোদ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তেল চুরির অভিযোগ তুলে বুধবার মৌড়িগ্রাম কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন চালক ও খালাসিরা। তাঁদের নেতৃত্ব দেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতা মাসুদ আলম খান। আন্দোলন চলার সময় কর্তৃপক্ষের কুশপুতুল পোড়ানো হয় এবং রাজ্য সরকারের ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের অধীন একটি ‘ক্যালিব্রেশন’ কেন্দ্র ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে সংস্থার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বিজয়কুমার বর্মা বিক্ষোভকারী নেতাদের সঙ্গে এ দিনই বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নেন।
আইওসি সূত্রের খবর, এ দিন মৌড়িগ্রাম ডিপোয় আন্দোলনকারী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে প্রায় দু’ঘণ্টা বৈঠক হয় সংস্থার কর্তাদের। চালক ও খালাসিদের প্রভাবিত সংগঠন মৌড়িগ্রাম ট্যাঙ্কার ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাসুদ পরে বলেন, “কাজ বন্ধ করে আন্দোলন চালানো যাবে না বলে দলীয় নেতৃত্ব নির্দেশ দিয়েছেন। আইওসি-কর্তৃপক্ষও অন্যত্র তেল ক্যালিব্রেশন বা পরিমাপের ব্যাপারে আমাদের দাবিদাওয়া মেনে নিয়েছেন। তাই আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।” মাসুদের দাবি, কর্তৃপক্ষ এ দিনের বৈঠকে আশ্বাস দিয়েছেন, কর্তাদের বিরুদ্ধে ওঠা তেল চুরির অভিযোগ নিয়ে তদন্ত হবে। সেই সঙ্গে আইওসি-র ভিতরে যে-মেশিনে ট্যাঙ্কারের তেল মাপা হয়, এখন থেকে সেখানে আর ওই কাজ হবে না। অন্য যে-কোনও জায়গায় সেটা করা যাবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদিও আইওসি-র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মৌড়িগ্রাম ডিপোর কাছে রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের অধীন যে-কেন্দ্র নিয়ে অভিযোগ উঠেছে সেই কেন্দ্রে আর ক্যালিব্রেশন বা তেলের পরিমাপ হবে না। সংস্থা নির্ধারিত অন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গায় হবে।
আইওসির জনসংযোগ আধিকারিক অলোককুমার সিংহ জানান, তেলের পরিমাপে কারচুপি নিয়ে যে-অভিযোগ উঠেছিল, তা ঠিক নয়। “মৌড়িগ্রাম ডিপোর ভিতরে এ-সব হতো না। হয়তো বাইরে হতো। এ ব্যাপারটা বোঝার পরেই ওঁরা আন্দোলন তুলে নিয়েছেন,” বলেছেন আইওসি-র জনসংযোগ আধিকারিক।