পোকার উপদ্রবে কমছে আখ চাষের জমি

একদা লাভজনক আখ চাষে সঙ্কট। বছর কয়েক আগেও ছবিটা ছিল অন্য রকম। প্রায় ৪০০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হত আরামবাগ মহকুমার বিভিন্ন এলাকায়। আলুর পরেই এই চাষ করে ভাল লাভ থাকত চাষির। কিন্তু এখন সে সব অতীত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০১:১৯
Share:

একদা লাভজনক আখ চাষে সঙ্কট।

Advertisement

বছর কয়েক আগেও ছবিটা ছিল অন্য রকম। প্রায় ৪০০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হত আরামবাগ মহকুমার বিভিন্ন এলাকায়। আলুর পরেই এই চাষ করে ভাল লাভ থাকত চাষির। কিন্তু এখন সে সব অতীত। মেরেকেটে ৭৫ হেক্টর জমিতে এখন আখ চাষ হয় এই মহকুমায়।

চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, ২০০৬ সাল নাগাদ আখের গায়ে লাল দাগ দেখা যায়। এর পর থেকেই এই চাষে বিভিন্ন পোকার উপদ্রব বাড়ে। চাষিদের অভিযোগ, ভাল প্রজাতির আখ বীজের সন্ধান দিতে পারছে না কৃষি দফতর। তার ফলেই এই বিপত্তি। জঙ্গলপাড়া গ্রামের শ্যামল মাইতি জানান, আখ চাষ মূলত ১৮০ দিনের ফসল হলেও ১০০ দিনের পর থেকেই সরাসরি জমি থেকে সেগুলি বিক্রি হয়ে যায়। বছর চার-পাঁচেক আগেও হুগলি ছাড়াও বর্ধমান, বাঁকুড়া, হাওড়া, দুই মেদিনীপুর-সহ বিভিন্ন জেলার বাজারে এর ভাল চাহিদা ছিল। কিন্তু এখন চাহিদা প্রায় তলানিতে। চাষিরা জানিয়েছেন, আলু চাষের পরে একই জমিতে প্রায় বিনা খরচে আখ চাষ করে বিঘা পিছু (১ হেক্টর-প্রায় ৬.৫০ বিঘা) ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা লাভ পাওয়া যেত। এখন সেই লাভ কমে এসেছে ২ হাজার টাকার আশপাশে। এই কারণেই অনেকে আখ চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন পুড়শুড়া ব্লক কৃষি আধিকারিক আনন্দ সাহা। তিনি বলেন, “গত বছর চাষিরা আখ পিছু ৮ টাকা থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত দাম পেয়েছেন। এ বার আখ চাষ কিছু বাড়তে পারে।”

Advertisement

সমগ্র মহকুমার আরামবাগ, গোঘাটের দু’টি ব্লক এবং খানাকুলের দু’টি ব্লক এবং পুরশুড়া ব্লকেই মূলত আখচাষ হয়। চাষিরা জানান, আখ চাষের জন্য আলাদা করে জমি লাঙল দিতে হয় না। ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে জমি থেকে আলু তুলে সেখানেই আখ ফেলে পায়ে করে টিপে দিলেই হল। এই চাষে আলাদা করে সারও দিতে হয় না। শুধু পর্যাপ্ত জল পেলেই হল।

উন্নত প্রজাতির আখ বীজ সরবরাহ না করার অভিযোগ মানেননি আরামবাগ মহকুমা কৃষি আধিকারিক সজল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘পুড়শুড়ায় আখ চাষকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনতে কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পুড়শুড়ায় কৃষি খামারে উন্নত প্রজাতির বীজ (সিওবি ৯৯১৬১) তৈরি হচ্ছে। একই জমিতে বার বার আখ চাষ না করে চাষিদের জমি পাল্টাবার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’’

তিনি জানান, আখচাষে পোকা এবং লাল দাগের সমস্যা কী ভাবে মেটানো যাবে সেই নিয়ে গ্রামে গ্রামে কর্মশালা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement