দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ী নির্মাণ সহায়ক না থাকায় গ্রামোন্নয়নের কাজ ব্যাহত হচ্ছে ডোমজুড়ের তিনটি পঞ্চায়েতে। ফলে, পরিষেবা থেকে গ্রামবাসীরাও বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনটি পঞ্চায়েত হল বাঁকড়া-২, মাকড়দহ-২ এবং মহিয়াড়ি-২। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অন্য তিন পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ককে বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে ওই তিনটি পঞ্চায়েতের নির্মাণ কাজ দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কাজের চাপে তাঁরা ওই পঞ্চায়েত তিনটিতে সে ভাবে সময় দিতে পারছেন না বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে তিনটি পঞ্চায়েতেরই অন্তত এলাকার উন্নয়নের জন্য ১৫ লক্ষ টাকা করে পড়ে রয়েছে।
সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন ডোমজুড়ের বিডিও তমোঘ্ন কর। তিনি বলেন, “নির্মাণ সহায়ক না থাকায় ওই পঞ্চায়েতগুলিতে বিভিন্ন উন্নয়মূলক কাজে সময়মতো স্কিম করা যাচ্ছে না। তা জমা হচ্ছে না। সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তাঁরা দ্রুত নির্মাণ সহায়ক নিয়োগের আশ্বাস দিয়েছেন।” জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নেয়ন আধিকারিক শুভ্রজ্যোতি ঘোষের আশ্বাস, “নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। দ্রুত নিয়োগ হবে ওই সব পঞ্চায়েতে।” বাঁকড়া-২, মাকড়দহ-২ এবং মহিয়াড়ি-২, তিনটি পঞ্চায়েতেরই নির্মাণ সহায়কেরা কেউ দু’বছর, কেউ বা তার চেয়ে কিছু আগে অবসর নিয়েছেন। কিন্তু তার পরে নিয়োগ হয়নি। এ থেকেই সমস্যার সূত্রপাত।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্মাণ সহায়কেরা রাস্তাঘাট, নিকাশি নালা তৈরি, নলকূপ বসানো, ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পে ঘর তৈরি, নির্মল ভারত অভিযান-সহ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন গুরুত্রবপূর্ণ প্রকল্প রূপায়ণে নকশা (স্কিম) তৈরি করেন। কিন্তু ওই তিনটি পঞ্চায়েত নির্মাণ সহায়ক না থাকায় সেই কাজ গতি পাচ্ছে না। ব্লক প্রশাসনের তরফে বাঁকড়া-২ পঞ্চায়েতের জন্য ডোমজুড় পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ককে, মাকড়দহ-২ পঞ্চায়েতের জন্য নারনার নির্মাণ সহায়ককে এবং মহিয়াড়ি-২ পঞ্চায়েতের জন্য মহিয়াড়ি-১ এর নির্মাণ সহায়ককে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সপ্তাহে এক বা দু’দিন করে তাঁদের বাড়তি দায়িত্ব নেওয়ার কথা। কিন্তু কাজের চাপে অনেক সময়েই তাঁরা নিজেদের পঞ্চায়েত ছেড়ে যেতে পারছেন না বলে ব্লক প্রশাসনের কর্তারাই মেনে নিয়েছেন। মাকড়দহ-২ এর উপপ্রধান লীনা দাস বলেন, “অনেকগুলি রাস্তা তৈরির কাজ বাকি। কবে কী ভাবে শেষ হবে জানি না।” একই ভাবে সমস্যার কথা জানিয়েছেন বাঁকড়া-২ এর উপপ্রধান নূর সাহেবা খাতুন। পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কারিগরি কর্মাধ্যক্ষ দীপক মুখোপাধ্যায়ও মেনে নিয়েছেন, ওই তিনটি পঞ্চায়েতে উন্নয়নের কাজ ব্যাহত হওয়ায় সমিতিও সার্বিক ভাবে পিছিয়ে যাচ্ছে। নিজেদের দুর্ভোগের কথা বলতে গিয়ে মহিয়াড়ি-২ পঞ্চায়েত বাসিন্দা অশোক চৌধুরী জানান, প্রকল্পের কাজ সময়ে শেষ হলে অন্তত বর্ষায় জল-কাদা ভাঙতে হয় না। রাস্তা খারাপ হয় না। কিন্তু হচ্ছেটা কই? একই বক্তব্য আরও অনেকের।