মেলা দেখানোর নাম করে নিয়ে গিয়ে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিল তার পরিচিত দুই যুবক। বাধা পেয়ে নাবালিকাকে শ্বাসরোধ করে এবং কুপিয়ে খুন করে তারা। সেই অপরাধে ওই দুই যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল আদালত।
বৃহস্পতিবার চুঁচুড়া আদালতের ফাস্ট ট্রাক ফার্স্ট কোর্টের বিচারক চৌধুরী হেফাজত করিম দাদপুরের বাসিন্দা রাম বাউরি এবং হাঁসা বাউরি নামে ওই দুই যুবককে ওই সাজা শোনান। বলাগড়ের বাসনা গ্রামের বাসিন্দা বছর চোদ্দোর ওই নাবালিকাকে খুনের ঘটনাটি ঘটেছিল ২০০৭ সালে। এত দিন ওই দুই যুবক জামিনে ছিল। মামলার সরকারি আইনজীবী চণ্ডীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মামলাটিতে ১৩ জন সাক্ষ্য দেন। বিচারক ওই দু’জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। সঙ্গে দু’হাজার টাকা করে জরিমানা। অনাদায়ে এক বছরের জেল।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই ওই নাবালিকার বাড়িতে আনাগোনা ছিল রাম ও হাঁসার। নাবালিকা তাদের ‘মামা’ বলে ডাকত। ২০০৭ সালের ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় ওই দুই যুবক নাবালিকাকে সাইকেলে বসিয়ে মেলা দেখানোর কথা বলে নিয়ে যায়। কিন্তু তার পরে নাবালিকা আর ফেরেননি। ওই রাতে রাম এবং হাঁসারও খোঁজ পাননি নাবালিকার বাড়ির লোকজন। পরের দিন সকালে নাবালিকার ক্ষতবিক্ষত দেহ মেলে স্থানীয় বাবলা খালের পাড়ে। ওই দিনই নাবালিকার পরিবারের পক্ষ থেকে রাম ও হাঁসার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় বলাগড় থানায়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তার পরের দিন হরিপাল থানার নৈটি গ্রামের একটি বাড়ি থেকে রাম ও হাঁসাকে গ্রেফতার করা হয়।
কিন্তু ময়না-তদন্তের রিপোর্টে গণধর্ষণের প্রমাণ না মেলায় এ সংক্রান্ত মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। অভিযুক্তেরা জামিনও পায়। পুলিশের দাবি, গ্রেফতারের পরে ধৃতেরা জেরায় কবুল করেছিল ধর্ষণের মতলবেই নাবালিকাকে বাড়ির বাইরে নিয়ে গিয়েছিল তারা। কিন্তু বাধা পাওয়ায় তাকে শ্বাসরোধ করে এবং কুপিয়ে খুন করে। গত বুধবার বিচারক রাম এবং হাঁসাকে দোষী সাব্যস্ত করে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার সাজা ঘোষণা হল। আদালতে উপস্থিত ছিলেন নিহত নাবালিকার বাবা। সাজা শুনে তিনি খুশি। বলেন, “মেয়েকে আর ফিরে পাব না। কিন্তু মেয়ের খুনিদের যে উপযুক্ত সাজা হয়েছে তাতে আমরা খুশি। এই ধরনের ঘটনা যেন আর কেউ না ঘটায়।’’