দলীয় পঞ্চায়েত সদস্যের পদত্যাগে সিপিএম দুষছে তৃণমূলকে

সিপিএমের এক পঞ্চায়েত সদস্যের পদত্যাগ ঘিরে রাজনৈতিক চাপান-উতোরে দিন ধরেই সরগরম পোলবার আকনা এলাকা। আকনা পঞ্চায়েত দখলের জন্য অমল মান নামে ওই সিপিএম সদস্যকে চা খাওয়ানোর নামে গাড়িতে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে পদত্যাগপত্রে সই করানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সিপিএম এ নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে। অভিযোগ মানেনি তৃণমূল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পোলবা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৪ ০১:০২
Share:

সিপিএমের এক পঞ্চায়েত সদস্যের পদত্যাগ ঘিরে রাজনৈতিক চাপান-উতোরে দিন ধরেই সরগরম পোলবার আকনা এলাকা। আকনা পঞ্চায়েত দখলের জন্য অমল মান নামে ওই সিপিএম সদস্যকে চা খাওয়ানোর নামে গাড়িতে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে পদত্যাগপত্রে সই করানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সিপিএম এ নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে। অভিযোগ মানেনি তৃণমূল।

Advertisement

১৯৭৮ সাল থেকে পঞ্চায়েতটি সিপিএমের দখলে রয়েছে। এখানে ১৭টি আসনের মধ্যে সিপিএমের হাতে ছিল ৯টি আসন। তৃণমূলের দখলে ৮টি। অমলবাবু পদত্যাগ করায় দু’দলের আসনসংখ্যা সমান হয়ে গেল। এ বার তৃণমূল অনাস্থা এনে ভোটাভুটির মাধ্যমে পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করতে চাইছে বলে সিপিএমের অভিযোগ।

বাড়োল-প্রসাদপুরের বাসিন্দা, দীর্ঘদিনের সিপিএম কর্মী অমলবাবু গত বছর ভোটে জিতে প্রথম বার ওই পঞ্চায়েতের সদস্য হন। সম্প্রতি তাঁর স্ত্রী মারা যান। তার পর থেকে তিনি কিছুটা মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। গত ২৮ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ তিনি বাড়ির কাছের একটি দোকানে চা খাচ্ছিলেন। অভিযোগ, সেই সময়ে পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের নির্মল ঘোষ স্থানীয় এক তৃণমূল কর্মীকে নিয়ে একটি গাড়িতে করে সেখানে আসেন এবং চা খাওয়ানোর কথা বলে অমলবাবুকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে হুমকি দিয়ে তাঁকে পঞ্চায়েতের নির্দিষ্ট পদত্যাগপত্রে সই করতে বাধ্য করেন।

Advertisement

ওই দিনই ব্লক অফিসে গিয়ে বিডিও ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্যের হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দেন অমলবাবু। নিয়মমতো ঘটনার ভিডিও-রেকর্ডিংও করানো হয় ব্লক প্রশাসনের তরফে। অমলবাবুর অভিযোগ, “ব্লক অফিস চত্বরে নির্মলবাবুর নেতৃত্বে কিছু তৃণমূল কর্মী ভিড় করে ছিল। ওরা আমাকে হুমকি দিয়েছিল। তাই বিডিও-র কাছে এবং ভিডিও-রেকর্ডিংয়ের সময়ে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছি বলে জানাই।”

অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন নির্মলবাবু। তাঁর দাবি, “মাস দেড়েক আগে তারাপীঠ থেকে ফেরার সময়ে ট্রেনে একটি দুর্ঘটনায় আমার বাঁ পায়ের আঙুল কাটা যাওয়ায় ঘর থেকে বেরোতে পারছি না। জোর করে ওই পদত্যাগপত্র সই করাব কী করে? তাতে আমাদের কোনও লাভ নেই। ওঁকে দলের সদস্য করালে তবেই লাভ হত।”

ওই দিনের পর থেকে আর পঞ্চায়েত অফিসে যাননি অমলবাবু। বুধবার তিনি অভিযোগ জানান প্রধান তুফান দাস এবং দলের পোলবা-১ লোকাল কমিটির সম্পাদক সূর্যেন্দু ঘোষের কাছে। সিপিএমের পক্ষ থেকে ঘটনার কথা জানানো হয় জেলাশাসক, মহকুমাশাসক এবং পুলিশ সুপারকেও। প্রধান তুফান দাস বলেন, “অমলবাবুর দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে পঞ্চায়েতের দখল নিতে তৃণমূল ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে। ৩০ জুলাই আমরা এ নিয়ে থানাতেও অভিযোগ জানাতে যাই। কিন্তু থানা অভিযোগ নেয়নি।” প্রায় একই বক্তব্য সূর্যেন্দুবাবুরও। অভিযোগ নেওয়া হয়েছে বলে থানার দাবি। বিডিও জানিয়েছেন, পদত্যাগপত্র পেশের দিন তাঁর ঘরে অমলবাবু একাই এসেছিলেন। তিনি স্বেচ্ছায় পঞ্চায়েত থেকে পদত্যাগ করছেন বলেই জানান। জেলাশাসক মনমীত নন্দা বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। লিখিত ভাবে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement