জেলা কংগ্রেসে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মিটছে না, কর্মসূচি নিল মান্নান-শিবিরও

বিজেপি ঘর গোছানোয় জোর দিয়েছে।সিপিএমের নানা কর্মসূচিতেও ইদানীং ভালই ভিড় হচ্ছে। সারদা-কাণ্ডের জেরে রাজ্যের শাসক দলের অস্বস্তিকে কাজে লাগিয়ে আসন্ন পুরভোট এবং আগামী বছরের বিধানসভা ভোটের জন্য হুগলিতে দুই বিরোধী দলের তত্‌পরতা বাড়ছে। কিন্তু আর এক বিরোধী দল কংগ্রেস এখনও ব্যস্ত গোষ্ঠী-কোন্দলেই।জেলায় কংগ্রেসের কোনও সভা-সমাবেশে অধীর গোষ্ঠীর নেতারা ঠারেঠোরে মান্নান-গোষ্ঠীকে বিঁধছেন। কখনও মান্নান গোষ্ঠীর কর্মসূচিতে অধীর গোষ্ঠীর নেতাদের দেখা মিলছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:২৫
Share:

বিজেপি ঘর গোছানোয় জোর দিয়েছে।

Advertisement

সিপিএমের নানা কর্মসূচিতেও ইদানীং ভালই ভিড় হচ্ছে।

সারদা-কাণ্ডের জেরে রাজ্যের শাসক দলের অস্বস্তিকে কাজে লাগিয়ে আসন্ন পুরভোট এবং আগামী বছরের বিধানসভা ভোটের জন্য হুগলিতে দুই বিরোধী দলের তত্‌পরতা বাড়ছে। কিন্তু আর এক বিরোধী দল কংগ্রেস এখনও ব্যস্ত গোষ্ঠী-কোন্দলেই।

Advertisement

জেলায় কংগ্রেসের কোনও সভা-সমাবেশে অধীর গোষ্ঠীর নেতারা ঠারেঠোরে মান্নান-গোষ্ঠীকে বিঁধছেন। কখনও মান্নান গোষ্ঠীর কর্মসূচিতে অধীর গোষ্ঠীর নেতাদের দেখা মিলছে না। লোকসভা ভোটে জেলার তিন কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থীদের জামানত জব্দ হওয়ার পরে পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। উল্টে কোন্দল বেড়েছে। দুই গোষ্ঠীর ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচিতে জেলায় ভঙ্গুর সংগঠন আদৌ কতটা চাঙ্গা হবে, তা নিয়ে গুঞ্জন চলছে দলের অন্দরেই।

হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে প্রীতম ঘোষকে টিকিট দেওয়া নিয়েই দলের প্রদেশ নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানের। তাঁর আপত্তি মানা হয়নি। এর পরেও ঘনিষ্ঠ মহলে মান্নানের ক্ষোভ, সারদা-কাণ্ড নিয়ে তাঁর লড়াই দলীয় নেতৃত্ব ভাল ভাবে তুলে ধরেননি। তার পর থেকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সভায় গরহাজির থেকেছেন মান্নান। গত ৪ জানুয়ারি ডানকুনিতে অধীরের সভায় যাননি মান্নান। তাঁর অনুপস্থিতিতেই জেলায় দল পরিচালনার ক্ষেত্রে মান্নান-বিরোধী বলে পরিচিত প্রীতম ঘোষের (দলের জেলা কো-অর্ডিনেটর) গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেন অধীর। অধীর বলেন, “দু’য়ে দু’য়ে চার এটাই যে, প্রীতমবাবুই দলের জেলা সভাপতি।”

এর পাল্টা হিসেবে গত রবিবার শেওড়াফুলির একটি অনুষ্ঠান ভবনে আগামী দিনের কর্মসূচি ঠিক করা নিয়ে আলোচনা হয় ‘জেলা কংগ্রেস’-এর ডাকে। সেখানে মান্নান ছাড়াও তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত দলের জেলা সভাপতি সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ নাথ প্রমুখ নেতারা থাকলেও প্রীতমবাবু বা তাঁর অনুগামীদের দেখা যায়নি। আলোচনার শুরুতেই নেতৃত্বের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শহর এবং ব্লক ধরে ধরে সভা এবং পদযাত্রা করতে হবে। ১৮ জানুয়ারি শেওড়াফুলিতে কেন্দ্রীয় ভাবে মিছিল এবং সভা হবে। কিন্তু প্রীতমবাবুর মতো নেতাকে বাদ দিয়ে কর্মসূচি ঠিক করা মানে যে খোদ প্রদেশ সভাপতিকেই অবজ্ঞা করা, কংগ্রেস শিবিরে তা নিয়ে ফিসফাস চলছে। আবার গত রবিবার থেকে প্রীতমবাবুরা জেলার নানা জায়গায় যে পদযাত্রার কর্মসূচি নিয়েছেন, সেখানে তাঁদের কেউই সামিল হচ্ছেন না বলে মান্নান শিবিরের এক নেতাই জানিয়ে দিয়েছেন।

মান্নান-শিবির যে অধীরের ঘোষণা ভাল ভাবে নেয়নি, তা সে দিন সঞ্জয়বাবুর কথা থেকেই পরিষ্কার হয়েছিল। প্রীতমবাবুর ডাকা ৪ জানুয়ারির সভাকে সঞ্জয়বাবু ‘বিক্ষুব্ধদের কর্মসূচি’ বলে চিহ্নিত করেছিলেন। মান্নান ঘনিষ্ঠ দিলীপ নাথ তাঁদের ঘোষিত কর্মসূচি নিয়ে বলেন, “সারদা নিয়ে মানুষের মনে যে সাড়া পড়েছে, তৃণমূলের যে মুখোশ খসে পড়ছে, তা মান্নানদার কৃতিত্বেই। এখন বাড়িতে বসে থাকা কিছু লোক সেটা ভাঙিয়ে রাজনীতির ময়দানে নাম কিনতে চাইছেন। যাঁরা প্রকৃত কংগ্রেসকর্মী, তাঁরা মান্নানদার সঙ্গেই আছেন।”

পাল্টা প্রীতমবাবুর বক্তব্য, “প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির নির্দেশে আমরা জেলায় দল চালাচ্ছি। রবিবার মুষ্টিমেয় তথাকথিত কিছু নেতা আলোচনায় বসেছিলেন বলে খবর পেলাম।” একই সঙ্গে রয়েছে তাঁর বক্রোক্তিও, “আগামী ২০ জানুয়ারি কলকাতায় সমাবেশ সফল করার জন্য কর্মসূচি নিতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন। আমার ধারণা, সে কথা মাথায় রেখেই মান্নানদা কর্মসূচি নিচ্ছেন। এতে নিশ্চয়ই দলেরই ভা‌ল হবে।”

জেলা কংগ্রেসের দুই শিবিরের এই টানাপড়েনে আশাহত হচ্ছেন সাধারণ কর্মী-সমর্থকেরাই। ডানকুনির কর্মিসভায় অধীর মেনেও নিয়েছিলেন, ‘হুগলিতে আমরা দুর্বল’। কিন্তু গোষ্ঠী-কোন্দল না মিটলে সেই দুর্বলতা কী ভাবে কাটবে, তা বুঝতে পারছেন না কর্মী-সমর্থকেরা।

বোমা উদ্ধার। বীরভূমের পাড়ুই থানার সাত্তোর পঞ্চায়েতের মহুলারার কাছে বেলুটি গ্রাম লাগোয়া একটি ক্যানালের ধারে প্রায় দেড়শোর বেশি বোমা উদ্ধার করল পুলিশ। সোমবার এলাকা থেকে খবর পেয়ে, বোলপুরের সিআই চন্দ্রশেখর দাস ও পাড়ুই থানার ওসি অমরজিত্‌ বিশ্বাসের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে বোমাগুলি উদ্ধার করে। জেলা পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া বোমাগুলি পদ্ধতি মেনে নিস্ক্রিয় করা হবে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন দু’য়েক আগে সাত্তোর পঞ্চায়েতের পলশা গ্রামে তৃণমূল ও বিজেপি উভয় দলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement