দু’টি ক্ষেত্রেই হোমের আবাসিককে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। একটি মামলা এখনও বিচারাধীন। অন্যটিতে আদালত দোষী সাব্যস্ত করল গুড়াপের হোমে গুড়িয়া হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত শ্যামল ঘোষকে। বৃহস্পতিবার ওই রায় দেন চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (থার্ড কোর্ট) মানস বসু।
২০১২ সালের জুলাই মাসে গুড়াপের দুলাল স্মৃতি সংসদ হোমে মাটি খুঁড়ে মানসিক ভারসাম্যহীন আবাসিক গুড়িয়ার পচাগলা দেহ মেলে। জেলা পুলিশের হাত থেকে ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হয় সিআইডিকে। সিআইডি-র তদন্তকারী অফিসারের কাছে অন্য এক আবাসিক মহিলা অভিযোগ করেন, ওই হোমের ভাঁড়ারঘরে নিয়ে গিয়ে শ্যামল তাঁকে ধর্ষণ করেছে। ধর্ষণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট ধারায় শ্যামলের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়। মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষাও করানো হয়। সেখানে ধর্ষণের প্রমাণও মেলে।
আবাসিক এবং হোমের কর্মীদের বয়ান অনুযায়ী, কোনও পদে না থাকলেও হোমের তৎকালীন সম্পাদক উদয়চাঁদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে শ্যামল রোজ হোমে যেত। সেখানকার বিভিন্ন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করত। কার্যত হোমের অলিখিত কর্তা হয়ে উঠেছিল সে। আবাসিক মেয়েদের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে তাঁদের উপরে অত্যাচার করত এবং মারধর করত বলে অভিযোগ।
চুঁচুড়া আদালতে এই ধর্ষণের মামলার শুনানি শুরু হয়। ১০ জন সাক্ষ্য দেন। সরকারি কৌঁসুলি বিদ্যুৎ রায়চৌধুরী জানান, বৃহস্পতিবার বিচারক শ্যামলকে দোষী সাব্যস্ত করেন। আগামী ৩০ অগস্ট তার সাজা ঘোষণা করা হবে।
সরকারি কৌঁসুলি জানান, অভিযোগকারী মহিলা আদতে ঝাড়খণ্ডে থাকতেন। তিনি স্বামী-বিচ্ছিন্না। গুড়াপের ওই হোমে আশ্রয় পান। গুড়িয়া-কাণ্ডের পরেই হোমটি ‘সিল’ করে দেয় রাজ্য সরকার। আবাসিকদের রাজ্যের বিভিন্ন হোমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ওই মহিলা বর্তমানে হুগলির জাঙ্গিপাড়ার একটি হোমে রয়েছেন।
আদালতে শ্যামল এ দিন সর্বক্ষণ মাথা নিচু করেই দাঁড়িয়ে ছিল। রায় ঘোষণার পরে তার মধ্যে বিশেষ হেলদোল দেখা যায়নি। পরে পুলিশ যখন বার করে নিয়ে যাচ্ছে, তখন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা বিষয়টি নিয়ে তার প্রতিক্রিয়া চান। জবাব না দিয়ে মাথা নিচু করে বেরিয়ে যায় শ্যামল।