গুড়াপের ‘দুলাল স্মৃতি সংসদ’ হোমে আবাসিক মহিলাদের বেআইনি গর্ভপাত এবং ধর্ষণের দু’টি ভিন্ন মামলায় দুই হাতুড়ে চিকিৎসককে গ্রেফতার করল সিবিআই। সোমবার শেখ সামসুদ্দিন গাজি এবং শেখ আজিজুল হক নামে ওই দু’জনকে ধরা হয়। সামসুদ্দিনের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির কাঁটামারিতে, আজিজুল গুড়াপেরই খাজুরদহের বাসিন্দা। ধৃতদের মঙ্গলবার চুঁচুড়া আদালতের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চৌধুরী হেফাজত করিমের এজলাসে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁদের তিন দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
সিবিআই সূত্রের খবর, ওই হোমের আবাসিক গুড়িয়া হত্যা-মামলার তদন্ত হাতে নেওয়ার পরে তাদের তদন্তকারী অফিসারদের কাছে দুই আবাসিক মহিলা অভিযোগে জানান, নিয়মিত মেয়েদের উপরে অত্যাচার করত হোমের তৎকালীন সম্পাদক উদয়চাঁদ কুমার এবং শ্যামল ঘোষ। এর ফলে, কেউ গর্ভবতী হয়ে পড়লে ওই চিকিৎসকদের ডাক পড়ত গর্ভপাত করানোর জন্য। চিকিৎসার অছিলায় ওই দুই চিকিৎসকও মহিলাদের ধর্ষণ করতেন। ওই আবাসিকদের অভিযোগের ভিত্তিতে মাস কয়েক আগে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়। সিবিআইয়ের আইনজীবী অরুণকুমার ভকত জানান, ওই দু’জন এত দিন পলাতক ছিলেন। ওই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি না, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। থাকলে তাদেরও ধরা হবে। আগামী শুক্রবার ধৃতদের শনাক্তকরণ (টিআই) প্যারেড হবে।
আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর ওই হোমেরই আবাসিক গুড়িয়া হত্যা-মামলার রায় দেবে চুঁচুড়া আদালত। আগেই অন্য এক আবাসিককে ধর্ষণের দায়ে তৎকালীন সম্পাদক উদয়চাঁদ কুমারের ঘনিষ্ঠ শ্যামল ঘোষকে যাবজ্জীবন কারদণ্ড দিয়েছে ওই আদালত। এ বার দুই হাতুড়েকে গ্রেফতার নিয়ে গুড়িয়া-কাণ্ড সামনে আসে ২০১২ সালের জুলাই মাসে। অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনা করে ঘটনার তদন্তভার জেলা পুলিশের হাত থেকে সরিয়ে সিআইডির হাতে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। পরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তের দায়িত্ব পায় সিবিআই।