টাকা পেয়েও তৈরি হয়নি বাড়ি

ইন্দিরা আবাস নিয়ে বিডিওর তদন্ত খানাকুলে

ইন্দিরা আবাস যোজনার উপভোক্তারা প্রকল্পের বরাদ্দের সিংহভাগ টাকা পেয়ে যাওয়া সত্ত্বেও বাড়ি নির্মাণ করেনি। গত ডিসেম্বর মাসের ১৭ তারিখে এমনই অভিযোগ তুলে আরামবাগের মহকুমাশাসকের কাছে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি করে আবেদন করেছিলেন খানাকুল-১ ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত কিশোরপুর-২ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অসিত গঙ্গোপাধ্যায়। মহকুমাশাসক প্রতুলকুমার বসুর নির্দেশে গত ৩ এবং ৪ ফেব্রয়ারি সংশ্লিষ্ট মদনবাটি গ্রামে ওই অভিযোগের তদন্তে গিয়ে ৪২টি ক্ষেত্রে গরমিল ধরেছেন বিডিও গোবিন্দ হালদার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খানাকুল শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:১১
Share:

ইন্দিরা আবাস যোজনার উপভোক্তারা প্রকল্পের বরাদ্দের সিংহভাগ টাকা পেয়ে যাওয়া সত্ত্বেও বাড়ি নির্মাণ করেনি। গত ডিসেম্বর মাসের ১৭ তারিখে এমনই অভিযোগ তুলে আরামবাগের মহকুমাশাসকের কাছে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি করে আবেদন করেছিলেন খানাকুল-১ ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত কিশোরপুর-২ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অসিত গঙ্গোপাধ্যায়। মহকুমাশাসক প্রতুলকুমার বসুর নির্দেশে গত ৩ এবং ৪ ফেব্রয়ারি সংশ্লিষ্ট মদনবাটি গ্রামে ওই অভিযোগের তদন্তে গিয়ে ৪২টি ক্ষেত্রে গরমিল ধরেছেন বিডিও গোবিন্দ হালদার।

Advertisement

বিডিও বলেন, “ওই ৪২ জনের মধ্যে বেশ কয়েকজন প্রথম এবং দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেয়েও বাড়ি তৈরি শুরুই করেননি। কয়েকজন আবার তাঁদের বাড়ি থাকা সত্ত্বেও ইন্দিরা আবাসের টাকা পেয়েছেন। প্রথমত, যাঁরা বাড়ি তৈরি শুরু করেননি তাঁরা কী ভাবে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেলেন তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। অন্যদিকে উপভোক্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সাত দিনের মধ্যে বাড়ি তৈরি শুরু না করলে সমস্ত টাকা ফেরত দিতে। না হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” একই সঙ্গে বাড়ি থাকা সত্ত্বেও যাঁরা টাকা পেয়েছেন সমস্ত টাকা ফেরত না দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা যায়, মদনবাটি গ্রামে ৮ ও ৯ নম্বর সংসদে গত ২০১৩-’১৪ এবং ২০১৪-’১৫ আর্থিক বছরে মোট ৭৪ জন উপভোক্তা ইন্দিরা আবাস যোজনার টাকা পেয়েছেন। তার মধ্যে একজনেরও বাড়ি নির্মাণ সম্পূর্ণ হয়নি। প্রকল্পে বরাদ্দ মোট ৭০ হাজার টাকার মধ্যে ২০১৪-’১৫ আর্থিক বছরে প্রকল্পের আওতায় আসা ৩০ জন উপভোক্তা খালি প্রথম কিস্তির ১৭ হাজার ৫০০ টাকা নিলেও ২০১৩-’১৪ আর্থিক বছরের ৪৭ জন উপভোক্তা দ্বিতীয় কিস্তি-সহ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা (১৭,৫০০+৪২,০০০) পেয়েও বাড়ি তৈরি করেননি বলে অভিযোগ।

Advertisement

কিশোরপুর-২ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের অসিত গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিযোগ, স্ব-ঘোাষিত তৃণমূল নেতা দ্বীপেন মাইতি মদনবাটি গ্রামে সমান্তরাল প্রশাসন চালাচ্ছেন। পঞ্চায়েতের কাজকর্ম খতিয়ে দেখতে আমাদের জনপ্রতিনিধিরা গ্রামে ঢুকতে পারে না। ইন্দিরা আবাস প্রকল্পের উপভোক্তাদের কাছ থেকে দ্বীপেন মাথা পিছু ১০ থেকে টাকা ২০ হাজার টাকা নিয়েছে বলে কিছু উপভোক্তা অভিযোগ জানিয়েছেন। তার ভিত্তিতেই তদন্তের দাবি জানিয়েছিলাম। যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে দ্বীপেন মাইতির পাল্টা মন্তব্য, “মিথ্যা গল্প ফেঁদে নিজেদের দুর্নীতি ঢাকতে চাইছেন উপপ্রধান। ইন্দিরা আবাস প্রকল্পে দ্বিতীয় কিস্তির শর্ত পূরণ না করা সত্ত্বেও পঞ্চায়েত দ্বিতীয় কিস্তির ছাড়পত্র দিয়েছে। কীসের স্বার্থে তা করা হয়েছে, তদন্ত হলেই তা বেরিয়ে আসবে।

এদিকে ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পের নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রকল্পের মোট বরাদ্দের ৭০ হাজার টাকার প্রথম কিস্তি ১৭ হাজার ৫০০টাকা উপভোক্তারা পাওয়ার পর লিন্টন লেভেল বা দরজা-জানালার মাথায় ঢালাই পর্যন্ত কাজ হলে দ্বিতীয় কিস্তির ৪২ হাজার টাকা পাবেন। ছাদ ঢালাই হলে সেই ছবি পাওয়ার পর দফতর থেকে তৃতীয় কিস্তির ১০ হাজার ৫০০ টাকা মিলবে। কাজ যথাযথ হচ্ছে বা হয়েছে কিনা দেখার কথা পঞ্চায়েতের কারিগরি বিশারদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement