অনাস্থায় জিতে ফের হুগলির একটি পঞ্চায়েতে ক্ষমতা দখল করল তৃণমূল। এ বার দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে সিপিএমের দখলে থাকা পোলবা-দাদপুর ব্লকের আকনা পঞ্চায়েতে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করল তারা। সিপিএম অবশ্য অভিযোগ তুলেছে, জেলার বিভিন্ন জায়গায় প্রলোভন এবং ভয় দেখিয়ে বিরোধীদের দখলে থাকা পঞ্চায়েতের দিকে হাত বাড়াচ্ছে তৃণমূল। এ ক্ষেত্রেও অন্যথা হয়নি। তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ মানেনি। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৭৮ সাল থেকে আকনা পঞ্চায়েত সিপিএমের দখলে ছিল। বর্তমানে সেখানকার আসন সংখ্যা ১৭। গত নির্বাচনে সিপিএম ৯টি আসন দখল করে। তৃণমূল পায় ৮টি আসন। গত ২২ সেপ্টেম্বর তৃণমূল সদস্যেরা প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অনাস্থা আনেন। মঙ্গলবার তার উপরে ভোটাভুটি হল। সিপিএমের দুই সদস্য অমর মান এবং সুমন্ত সর্দার ভোটাভুটিতে গরহাজির ছিলেন। ফলে, ১৫ জন সদস্য ভোট দেন। তাতে তৃণমূল ৮-৭ ব্যবধানে জিতে যায়। সিপিএমের অভিযোগ, অমরবাবু এবং সুমন্তবাবু দীর্ঘদিন ধরেই ওই পঞ্চায়েতে তাঁদের সদস্য। তৃণমূল ইদানিং তাঁদের দল ছাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। শাসক দলের চাপের কাছে নতিস্বীকার করেই এ দিন ওই দু’জন ভোটাভুটি থেকে নিজেদের সরিয়ে নেন। সিপিএমের পোলবা-১ লোকাল কমিটির সম্পাদক সূর্যেন্দু ঘোষ বলেন, ‘‘জনগণ আমাদের নির্বাচিত করেছিল। টাকার লোভ দেখিয়ে, সন্ত্রাস সৃষ্টি করে পঞ্চায়েত দখল করল। ভোটাভুটির সময় বহিরাগতদের এনে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল।” তাঁর সংযোজন, “শুধু এখানেই নয়, সব জায়গাতেই ওরা এই ভাবেই পঞ্চায়েত, পুরসভা দখল নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।’’ সিপিএমের অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য নির্মল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘একটানা চার দশক ওরা এই পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু উন্নয়নের কোনও চেষ্টাই করেনি। সিপিএমের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়েই দু’জন সদস্য ওই দলে থাকতে চাননি।” গত কয়েক মাসে সিঙ্গুরের নসিবপুর, বারুইপাড়া-পলতাগড়, পাণ্ডুয়ার শিখিরা-চাপ্তা সহ বিরোধীদের হাতে থাকা বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েতে অনাস্থা আনে তৃণমূল। অনেক ক্ষেত্রেই সিপিএম বা বিজেপির সদস্যরা দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। ভোটাভুটিতে জিতে ওই সব পঞ্চায়েতের ক্ষমতা তৃণমূল দখল করে নেয়। এ বার ওই তালিকায় সংযোজন হল আকনা-পঞ্চায়েতের নাম।