হাওড়ার দ্বীপাঞ্চলের প্রসূতিদের জন্য ‘বিশ্রামকক্ষ’ তৈরির সিদ্ধান্ত নিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। আমতা-২ ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে ওই ঘর তৈরির জন্য প্রায় ৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ১০ শয্যার এই প্রকল্পের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস। প্রসবের নির্ধারিত তারিখের এক সপ্তাহ আগেই প্রসূতিদের এখানে আনা হবে।
ভাটোরা এবং ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান এই দুই পঞ্চায়েত ওই ব্লকের ‘দ্বীপাঞ্চল’ বলে পরিচিত। কুলিয়াঘাট এবং গায়েনপাড়া ঘাট থেকে নৌকায় যাতায়াত করেন গ্রামবাসী। কিন্তু গরমে মুণ্ডেশ্বরী নদীর জল কমে গেলে নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তখন দু’টি ঘাটের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতে হয় গ্রামবাসীকে। কুলিয়াঘাটে পাকা সেতুর দাবি তাঁদের দীর্ঘদিনের। সেই সেতু হলে দ্বীপাঞ্চলের মানুষ সহজেই মূল স্থলভূমিতে যাতায়াত করতে পারতেন। কিন্তু সেতু হয়নি। উন্নতি হয়নি রাস্তাঘাটেরও। ফলে, প্রসূতিদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে সমস্যায় পড়েন দ্বীপাঞ্চলের মানুষ। প্রসূতিদের ভ্যানরিকশা বা পালকিতে চাপিয়ে নিয়ে যেতে হয় কুলিয়াঘাট পর্যন্ত। সেখান থেকে সাঁকো পার করে অ্যাম্বুলান্স বা গাড়িতে নিয়ে যেতে হয় জয়পুর বা বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালে।
সমস্যার সমাধানে ভাটোরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অন্তর্বিভাগ চালু করার জন্য বাসিন্দারা জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আবেদন করলেও কাজ হয়নি। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানান, রাস্তাঘাটের উন্নতি না-হলে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী বহাল করা সম্ভব নয়। গত বছর মার্চ মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠকে আমতার জনপ্রতিনিধিরা দ্বীপাঞ্চলের সমস্যাটির কথা তোলেন। ওই বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রীর সামনে জেলা স্বাস্থ্যকর্তারা ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে প্রসূতিদের জন্য বিশ্রামকক্ষ খোলার কথা বলেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, প্রসব বেদনা উঠলে দ্বীপাঞ্চলের প্রসূতিদের তড়িঘড়ি জয়পুর বা বাগনান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া কঠিন। তাই আগে থেকেই আশাকর্মীরা সরকারি খরচে ওই প্রসূতিদের বিশ্রামকক্ষে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করবেন। এখানে তাঁদের চিকিৎসকেরা নিয়মিত পরীক্ষা করবেন। প্রয়োজনে ‘রেফার’ করা হবে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, যতদিন না দ্বীপাঞ্চলের রাস্তাঘাটের উন্নতি হচ্ছে, ততদিন এ ভাবেই চালাতে হবে।