পুরবোর্ড গঠনে জোড়া অস্বস্তি তৃণমূলে

নতুন কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণের দিন এগিয়ে আসছে। কিন্তু উলুবেড়িয়ায় পুরভোটে জেতার দু’সপ্তাহ পরেও বোর্ড গঠনকে ঘিরে অস্বস্তি কাটছে না তৃণমূলের। একে তো দলে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নিয়ে কোন্দল কতদূর গড়াবে, তা নিয়েই চিন্তিত জেলা তৃণমূল নেতাদের একটি বড় অংশ, তার উপরে রয়েছে বোর্ড গড়া হলেও তার স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৫ ০১:৪৭
Share:

নতুন কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণের দিন এগিয়ে আসছে। কিন্তু উলুবেড়িয়ায় পুরভোটে জেতার দু’সপ্তাহ পরেও বোর্ড গঠনকে ঘিরে অস্বস্তি কাটছে না তৃণমূলের। একে তো দলে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নিয়ে কোন্দল কতদূর গড়াবে, তা নিয়েই চিন্তিত জেলা তৃণমূল নেতাদের একটি বড় অংশ, তার উপরে রয়েছে বোর্ড গড়া হলেও তার স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন। কেননা, সংখ্যাগরিষ্ঠতার থেকে মাত্র দু’টি বেশি আসন পেয়েছে তারা। তাই তাঁদের যে সংশয় কাটছে না তা ঘনিষ্ঠ মহলে স্বীকারও করছেন জেলা তৃণমূল নেতাদের অনেকেই। একই সঙ্গে তাঁদের আশঙ্কা, তৃণমূলকে ক্ষমতায় বসতে না দেওয়ার ব্যাপারে বিরোধীরা তলে তলে এককাট্টা হতে পারে। বিরোধীরা অবশ্য প্রকাশ্যে তেমন সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়েছে।

Advertisement

উলুবেড়িয়া পুরসভায় মোট আসন ৩২। এর মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ১৯টি। বামফ্রন্ট ৬টি, বিজেপি এবং কংগ্রেস পেয়েছে যথাক্রমে ৪ এবং ৩টি আসন। নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরেই কয়েকটি ওয়ার্ডের ফল বিশ্লেষণ করে বিরোধীরা এককাট্টা হয়েছিল বলে দাবি করেছিল তৃণমূল। যদিও বিরোধীরা সে দাবি মানেনি। তৃণমূল নেতারাই এখন মনে করছেন, পুরসভায় ক্ষমতা দখলের প্রশ্নেও বিরোধীরা নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া করতে পারে। অন্য দিকে, দলে চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য একাধিক পদপ্রার্থী রয়েছেন। নিয়ম হল— দল যাঁকে নির্বাচিত করবে, তিনিই ওই পদে বসবেন। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্ত যদি কোনও চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর পছন্দ না হয়, তা হলে তিনি নিজের দলের গুটিকয়েক কাউন্সিলরকে ‘ম্যানেজ’ করে বিরোধীদের সঙ্গে হাত মেলাতে পারেন। সম্মিলিত ভাবে বিরোধীরা তাঁর পিছনে দাঁড়ালেই কেল্লা ফতে।

গত ৬ মে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেতা কাউন্সিলরদের নিয়ে নজরুল মঞ্চে সম্মেলন করেন। বিভিন্ন জেলায় চেয়ারম্যান নির্বাচনের দায়িত্ব তিনি তুলে দেন জেলারই কিছু বাছাই করা নেতাদের হাতে। উলুবেড়িয়া পুরসভায় এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলক রায়কে। যিনি একাধারে উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক এবং দলের হাওড়া জেলা (গ্রামীণ) সভাপতি। কিন্তু এখনও তিনি চেয়ারম্যান বেছে উঠতে পারেননি বলেই তৃণমূল সূত্রের খবর। ঘনিষ্ঠ মহলে পুলকবাবু জানিয়েছেন, সাংসদ সুলতান আহমেদ, উলুবেড়িয়া উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক তথা কারামন্ত্রী হায়দর আজিজ সফি প্রমুখের সঙ্গে কথা বলেই চেয়ারম্যান ঠিক হবে।

Advertisement

চেয়ারম্যান পদ নিয়ে দলের অনেকে গোষ্ঠী-বিবাদের আশঙ্কা করলেও তা উড়িয়ে দিয়েছেন পুলকবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। পদ্ধতি মেনে দলীয় সিদ্ধান্তমতোই চেয়ারম্যান ঠিক করা হবে। অন্য দল ভাঙিয়ে নিজেদের দল ভারী করার দরকার হবে না।’’

আগামী ১৮ মে কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। তার আগে বিরোধীরা তলে তলে এককাট্টা হওয়ার সম্ভাবনার কথা মানতে চায়নি। তারা এখন নিজেদের ঘর বাঁচানোকেই প্রাধান্য দিচ্ছে। তাদের আশঙ্কা, বোর্ডে গরিষ্ঠতা ধরে রাখার জন্য তৃণমূল বিরোধী কাউন্সিলরদের দিকে হাত বাড়াতে পারে। বিগত পুরবোর্ডে প্রথমে কংগ্রেসের ১১ জন কাউন্সিলর ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৮ জনকে ভাঙিয়ে নেয় তৃণমূল। পাশাপাশি, বামফ্রন্টের চার কাউন্সিলরের মধ্যে ফরওয়ার্ড ব্লকের এক জনকে ভাঙানো হয়। একই অবস্থা এ বার যাতে না হয়, সে দিকেইলক্ষ্য রাখা হচ্ছে বলে বিরোধী নেতাদের দাবি। জেলা কংগ্রেস সভাপতি কাজি আব্দুল রেজ্জাক বলেন, ‘‘গঠনমূলক বিরোধীর ভূমিকা পালন করব। তিন কাউন্সিলর িনয়েই সংগঠন করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement