তৃণমূলে গোষ্ঠীকোন্দলের জের

অনাস্থা প্রস্তাবের আবেদন খারিজ করল প্রশাসন

গোষ্ঠীকোন্দল এমনই জায়গায় পৌঁছেছে যে সরকারি নিয়মকে অগ্রাহ্য করছেন দলের সদস্যরা। এমনই ঘটনা দেখা গেল হাওড়ার জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জগতবল্লভপুর শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৫২
Share:

গোষ্ঠীকোন্দল এমনই জায়গায় পৌঁছেছে যে সরকারি নিয়মকে অগ্রাহ্য করছেন দলের সদস্যরা। এমনই ঘটনা দেখা গেল হাওড়ার জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতিতে।

Advertisement

তৃণমূল শাসিত এই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে চেয়ে দলেরই একাংশ মহকুমা শাসকের কাছে আবেদন জমা দিয়েছিল। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে প্রশাসন। আবেদন খারিজের ব্যাপারে মহকুমা প্রশাসনের যুক্তি, নিয়মানুযায়ী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে তাঁর কার্যকালের মেয়াদ আড়াই বছর পূর্ণ হওয়ার আগে কোনওভাবেই অনাস্থা প্রস্তাব আনা যাবে না। বর্তমান আবেদনটি যাঁর বিরুদ্ধে করা হয়েছে সেই মহম্মদ হাফিজুল রহমানের কার্যকালের মেয়াদ আড়াই বছর পূর্ণ হয়নি। তাই অনাস্থা প্রস্তাব সংক্রান্ত আবেদন খারিজ করা হল।

২০১৩ সালে জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন মহম্মদ ইব্রাহিম। ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে তৃণমূল শাসিত এই পঞ্চায়েত সমিতিতেই তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন দলের বেশিরভাগ সদস্য। অনাস্থায় হেরে গিয়ে ইব্রাহিম সভাপতির পদ থেকে অপসারিত হন। নতুন সভাপতি হন মহম্মদ হাফিজুল। ফের সেই ইব্রাহিমের নেতৃত্বেই হাফিজুলের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চেয়ে ২৪ জন সদস্য আবেদন জমা দেন।

Advertisement

এর আগে বেআইনিভাবে গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছিল ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে। হাফিজুল অভিযোগের সরেজমিন তদন্ত করতে গেলে তাঁকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে ইব্রাহিম এবং তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। হাফিজুলকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে ইব্রাহিমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারের কথা জানিয়ে দেন জেলা সদর তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায়।

ইব্রাহিমের অবশ্য দাবি, তাঁকে বহিষ্কার করা হয়নি। সেই ইব্রাহিমের নেতৃত্বেই হাফিজুলের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চেয়ে আবেদন জমা পড়ার ঘটনায় জগতবল্লভপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল ফের সামনে চলে এসেছে।

তবে আবেদন জমা পড়ার পরের দিনই জেলা সদর সভাপতি তথা রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় পঞ্চায়েত সমিতিতে দলীয় সদস্যদের ডেকে জানিয়ে দেন, সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা যাবে না। কেউ ভোটাভুটিতে অংশ নিলে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। শেষ পর্যন্ত প্রশাসন আবেদন খারিজ করায় গোষ্ঠীকোন্দলে জর্জরিত স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব হাঁফ ছাড়লেন বলে মনে করছে জেলার রাজনৈতিক মহল।

তবে সমস্যা পুরোপুরি মেটেনি। কারণ, একইসঙ্গে সহ সভাপতির বিরুদ্ধেও যে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল সেটি গ্রহণ করেছে মহকুমা প্রশাসন। তার উপরে ভোটাভুটি হবে আগামী ১০ নভেম্বর। এক্ষেত্রেও অরূপবাবু জানিয়েছেন অনাস্থা প্রস্তাবের উপরে ভোটাভুটিতে যে সব দলীয় সদস্য অংশগ্রহণ করবেন তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।

অরূপবাবুর এ হেন বার্তার পর সভাপতি এবং সহ সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চেয়ে আবেদন করা সদস্যদের অন্যতম পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ দুধকুমার রায় বলেন, ‘‘আমরা দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলব।’’

যদিও মহম্মদ ইব্রাহিম জানিয়েছেন, সমিতিতে তৃণমূলের ২৪ জন সদস্য আছেন। তাঁদের মধ্যে ২১ জন অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন। এঁরা সকলেই সহ সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে ভোট দেবেন। দ‌ল যদি বহিষ্কার করে তাতেও পরোয়া নেই। প্রয়োজনে নির্দল সদস্য হয়েই তাঁরা কাজ করবেন।

শ্লীলতাহানির অভিযোগে ধৃত। প্রতিবন্ধী এক যুবতীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে পড়শি এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে মগরায়। ধৃতের নাম শেখ সাহাবুদ্দিন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ ওই যুবতী বাড়ির পাশে রাস্তার কলে বাসন মাজছিলেন। সেখানে তখন লোকজন ছিল না। অভিযোগ, সেই সুযোগে সাহাবুদ্দি‌ন তাঁর শ্লীলতাহানি করে। মেয়েটি চিৎকার করলে ১০০ টাকা দিয়ে তাঁকে চুপ করতে বলে ধৃত। যুবতীর চিৎকারে লোকজন বেরিয়ে এসে অভিযুক্তকে ধরে মারধর করেন। পরে পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement