এই কাজেই পূর্ত দফতরের ঢিলেমির অভিযোগ উঠেছে।ছবি: মোহন দাস।
দৈর্ঘ্য সাকুল্যে দেড় কিলোমিটার। সংস্কারের সময়সীমা ছিল ৯ মাস। সেই সময়সীমা পার হয়ে দু’বছর কেটে গিয়েছে। অথচ কলকাতার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা আরামবাগের লিঙ্ক রোডের সংশ্লিষ্ট অংশের কাজ এখনও শেষই হল না। পূর্ত দফতরের কাজে এমন দীর্ঘসূত্রীতায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন বাস মালিক থেকে ব্যবসায়ী সংগঠন এবং ওই রাস্তায় যাতায়াতকারী মানুষজন।
আপাত অপরিসর ওই রাস্তার একদিন বন্ধ করে কাজ চলায় প্রতিদিন যানজটে পড়ে শহরবাসীর নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়। পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের পরিবহণ ব্যবস্থাও বেসামাল হয়ে পড়েছে। ঘটছে দুর্ঘটনাও। শুধু সাধারণ যানবাহনই নয়, রোগী নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স, দমকলের মতো জরুরি পরিষেবার গাড়িও দীর্ঘসময় আটকে থাকছে যানজটে। কাজে গতিহীনতা এবং যানজট সহ বিভিন্ন অসুবিধার কথা স্বীকার করেছেন পূর্ত দফতরের (সাধারণ) আরামবাগ শাখার সহকারী বাস্তুকার নিরঞ্জন ভড়। তিনি বলেন, ‘‘আরামবাগ লিঙ্ক রোডটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। সেই কারণে ৯ মাসের মধ্যে সংস্কারের কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু মাটি খুঁড়তে গিয়ে এলোপাতাড়ি বিছানো টেলিফোনের তার কেটে যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। তা ছাড়া শহরের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন হয়ে গিয়ে ব্যাঙ্কের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে জলের পাইপ লাইনের। এ সব ঠিক করতে সময় লাগছে। পাশাপাশি রাস্তার গায়ে বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর কাজও করতে হচ্ছে। বর্তমানে বালি জোগানের অভাবেও কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। এ সবের জন্যই দেরি হয়ে যাচ্ছে।’’ তবে তাঁর আশ্বাস, “আর দিন পনেরোর মধ্যে পুরো রাস্তার ডবল লেন সংস্কারের কাজ শেষ হয়ে যাবে।’’
মহকুমা পূর্ত দফতর (সাধারণ) সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার সঙ্গে হুগলি, বাঁকুড়া, বর্ধমান, পুরুলিয়া, দুই মেদিনীপুরের যোগাযোগের একমাত্র ওই সড়কটির আরামবাগ শহরের মধ্যে ঢুকে থাকা ১.২ কিলোমিটার অংশ পুরোটাই ঢালাই হচ্ছে। ৪৬ ফুট চওড়া রাস্তাটি মজবুত করতে ১ মিটার গভীর করে খুঁড়ে ঢালাই হচ্ছে দেড় ফুট ঘনত্বের। এর জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৯ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা। লিঙ্ক রোডের গৌরহাটি মোড় থেকে হাসপাতাল মোড় পর্যন্ত ১.২ কিলোমিটার ডবল লেনের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর। ফুটপাত এবং নিকাশি নালা নির্মাণের কাজ ফেলে রেখে খালি ডবল লেনের একদিকের কাজ শেষ হয়েছে। অন্যদিকেও রাস্তা নির্মাণের কাজ এখনও ২০০ মিটার বাকি। ফলে আশ্বাস পেলেও তাতে কতটা কাজ হবে তা নিয়ে সংশয়ে এলাকার মানুষ।