Cyclone Amphan

আমপান ক্ষতিপূরণ, এ বার আবেদন জমা পড়ল সামান্যই

প্রতিটি ব্লক অফিসে আবেদনপত্র জমা দেওয়ার জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতভিত্তিক ‘ড্রপ বক্স’ করা হয়েছে। তত্ত্বাবধান করছে জেলা প্রশাসন।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২০ ০৫:৫৯
Share:

ফাইল চিত্র।

আমপানের ক্ষতিপূরণের জন্য বৃহস্পতিবার থেকে তৃতীয় পর্যায়ের আবেদনপত্র জমা নেওয়া শুরু হল। কিন্তু এ দিন কার্যত মাছি তাড়ালেন হাওড়া জেলার ১৪টি ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। আবেদন এল সামান্যই।

Advertisement

প্রতিটি ব্লক অফিসে আবেদনপত্র জমা দেওয়ার জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতভিত্তিক ‘ড্রপ বক্স’ করা হয়েছে। তত্ত্বাবধান করছে জেলা প্রশাসন। কিন্তু প্রথম দু’দফার মতো এ বার সেই ভিড় না-থাকা নিয়ে জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, সিংহভাগ ক্ষতিগ্রস্ত টাকা পেয়ে গিয়েছেন। সেই কারণেই ভিড় কম। আজ, শুক্রবার আবেদনপত্র জমা নেওয়ার শেষ দিন।

মূলত পঞ্চায়েত এবং কিছু পঞ্চায়েত সমিতিতে আমপান ক্ষতিপূরণের প্রথম পর্যায়ের আবেদন জমা পড়ে ঝড় হওয়ার অব্যবহিত পরে। তার ভিত্তিতে তৈরি তালিকায় স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ ওঠে। জুন মাসের শেষ সপ্তাহে জেলার ১৪টি ব্লকে টাস্ক ফোর্স গঠন করে অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখা এবং ক্ষতি না-হওয়া সত্ত্বেও যাঁরা টাকা পেয়েছেন তাঁদের কাছ থেকে তা ফেরত নেওয়ার নির্দেশ দেয় জেলা প্রশাসন। একইসঙ্গে ফের ক্ষতিগ্রস্তদের কাছ থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ে আবেদন জমা নেওয়ার কথা বলা হয় ব্লক প্রশাসনগুলিকে। টাস্ক ফোর্স সরেজমিন তদন্ত করে ক্ষতিগ্রস্তদের নয়া তালিকা তৈরি করে। টাকাও অধিকাংশ প্রাপকের অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে।

Advertisement

এ দিন তৃতীয় পর্যায়ে কারা আবেদন করলেন?

বিভিন্ন ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্বিতীয় দফায় টার্স্ক ফোর্সের তদন্তের পরেও যাঁদের নাম ওঠেনি, মূলত তাঁরা আবেদন করেছেন। আবার এমন কিছু ক্ষতিগ্রস্তও আছেন, নানা কারণে যাঁদের নাম আগের দু’দফাতেই ছিল না। বিভিন্ন ব্লকে একাধিক আবেদনকারীর সঙ্গে কথা বলেও এমনটা জানা গিয়েছে।

এ দিন বাগনান-১ ব্লকে বাকসিহাট পঞ্চায়েত এলাকা থেকে আবেদন করতে এসেছিলেন এক মহিলা। তিনি বাপের বাড়িতে থাকেন। পাশেই বাবার দেওয়া একচিলতে জমিতে তিনি বাড়ি করেছিলেন। সেই বাড়ি আমপানে ভেঙে যায়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করেছিলেন মহিলা। কিন্তু টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা যখন তাঁর শ্বশুরবাড়িতে আবেদনপত্র যাচাই করতে যান তখন প্রতিবেশীরা জানিয়েছিলেন, তিনি বাপের বাড়িতেই থাকেন, এমনই দাবি ওই মহিলার। তিনি বলেন, ‘‘বাপের বাড়ির পাশে আমার যে নিজের বাড়ি ছিল, সেই তথ্য প্রতিবেশীরা দেননি। আমার নামও তালিকায় ওঠেনি। তাই ফের আবেদন করলাম।’’

এ বারেও সম্পূর্ণ এবং আংশিক— দু’ধরনের ক্ষতির জন্যই আবেদনপত্র জমা নেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি ব্লকে এ জন্য একাধিক পদস্থ আধিকারিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। টাস্ক ফোর্সই প্রতিটি আবেদন যাচাই করে তালিকা তৈরি করবে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে। তবে, যে হেতু ঝড়ের পরে দু’মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে এবং বহু ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি মেরামত করে নিয়েছেন, তাই তদন্ত যে বেশ কঠিন, তা মেনে নিয়েছেন বিডিওরা।

ডোমজুড়ের বিডিও রাজা ভৌমিক বলেন, ‘‘মেরামত করা হলেও তা যদি সম্প্রতি করা হয়, সেটা খুব খুঁটিয়ে দেখে বুঝে নিতে হবে।’’ পাঁচলার বিডিও এষা ঘোষ বলেন, ‘‘কী ভাবে তদন্ত করতে হবে সে বিষয়ে আধিকারিকদের সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।’’ উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায় বলেন, ‘‘বাড়ির যখন ক্ষতি হয়েছিল তখন অনেকে ছবি তুলে রেখেছেন। প্রয়োজনে সেটা দেখা হবে।’’

হুগলিতেও বিভিন্ন ব্লকে বিশেষ ভিড় ছিল না। প্রশাসন সূত্রের খবর, বলাগড় ব্লকে ৪৭টি আবেদনপত্র জমা পড়েছে। অনেক ব্লক প্রশাসনই অবশ্য ওই সংখ্যা জানাতে পারেনি। তাঁরা জানিয়েছেন, আজ, শুক্রবার জমা পড়া আবেদনপত্র মিলিয়ে হিসেব করা হবে। বিভিন্ন পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিরা জানান, অনেকে বৃষ্টির জন্য এ দিন আবেদনপত্র জমা দিতে যাননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement