জমি বিলির পরে চলছে মিষ্টি খাওয়ানো। — নিজস্ব চিত্র
রাজ্য সরকারের তরফে বৃহস্পতিবার সিঙ্গুরে আর এক দফা চাষিদের জমি ফিরিয়ে দেওয়া হল। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ জেলা প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকেরা এ দিন ওই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন। বেড়াবেড়ি মৌজায় মোট ৩৬ একর জমি চাষিদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, এর আগে চলতি মাসে প্রতিশ্রুতি মতো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম পর্যায়ে চাষিদের জমি ফিরিয়ে দেন। ওই দিন তিনি চাষিদের সঙ্গে রীতিমতো কৃষিজমিতে নেমে সরষের বীজ ছড়িয়ে দেন। চাষিদের তিনি শস্যবীজ ছাড়াও সেদিন সার বিলি করেন। তখনই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, ‘পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে চাষিদের জমি ফিরিয়ে দেওয়া হবে।’ সেই কথা রাখতেই বৃহস্পতিবার সিঙ্গুরে আসেন পার্থবাবু। এ দিন মোট ১১৩ জন চাষিকে জমি ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
এর আগে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, সিঙ্গুরে ইচ্ছুক-অনিচ্ছুক নির্বিশেষে সমস্ত চাষিদের তিন মাসের ভিতরে সমস্ত জমি ফিরিয়ে দিতে হবে। তখন রাজ্য সরকার ঘোষণা করে, সিঙ্গুরের জমি চাষিদের চাষযোগ্য করে ফেরানো হবে। টাটা প্রকল্প এলাকায় সেই কাজকে রূপায়িত করতে গত প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক দিনরাত এক করে কাজ করে চলেছেন। জেলার শীর্ষ আধিকারিকেরা সেখানে রীতিমতো ক্যাম্প করে রয়েছেন। টাটা প্রকল্প এলাকার শেড এবং জমির উপর কংক্রিটের চাদর সরানোর কাজ বর্তমানে শেষ পর্যায়ে।
সিঙ্গুরের বেড়াবেড়ি মৌজায় এ দিন শিক্ষামন্ত্রী চাষিদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁরা যাতে দ্রুত কাজ শুরু করতে পারেন সেই লক্ষ্যে সার ও শস্যবীজ দেন। শিক্ষামন্ত্রী ছাড়াও এ দিন ওই অনুষ্ঠানে হুগলি জেলাশাসক সঞ্জয় বনশাল এবং পুলিশ সুপার প্রবীন ত্রিপাঠী উপস্থিত ছিলেন। পার্থবাবু এ দিন আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘‘এক সময় সিঙ্গুরের এই জমিতে দাঁড়িয়েই মার খেয়েছি। আর এখন এখানে দাঁড়িয়ে চাষিদের জমি ফিরিয়ে দিচ্ছি। খুবই ভাল লাগছে।’’ এ দিন চাষিদের তিনি নিজের হাতে মিষ্টি খাইয়ে দেন। জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, ‘‘এই এলাকায় চাষের কাজে চাষিদের সুবিধার জন্য মোট ৪৬টি গভীর নলকূপ বসানো হবে।’’