উদ্ধার:ধৃতদের থেকে মিলেছে এমনই নানা জিনিস। নিজস্ব চিত্র
খালি চোখে কিছুই মালুম হয়নি। কিন্তু একটু খানাতল্লাশি করতেই পুলিশের চক্ষু চড়কগাছ!
বালিশের ভিতরে তুলোর মধ্যে গয়না! বালা, দুল, আংটি, আরও কত কী! ১২ অক্টোবর দুপুরে হুগলির বৈদ্যবাটির চ্যাটার্জিপাড়ার একটি ফাঁকা বাড়িতে ঢুকে আলমারি ভেঙে গয়না এবং নগদ কয়েক হাজার টাকা হাতিয়ে পালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। এ নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিল ওই পরিবার। নেমে দিন কয়েক আগে উত্তর ২৪ পরগনার টিটাগড়ের মোহনপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় লক্ষ্মণ সিংহ নামে এক যুবককে। তাকে জেরা করে ওই এলাকা থেকেই ধরা হয় করণ মল্লিক নামে আর এক জনকে। বুধবার রাতে শেওড়াফুলি ফাঁড়ির পুলিশ করণের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। পুলিশের দাবি, সেখান থেকেই ওই সব জিনিস উদ্ধার হয়। চ্যাটার্জিপাড়ার বাড়িটির গয়না-টাকার পাশাপাশি অন্যান্য জায়গা থেকে চুরি করা জিনিসপত্রও সেখানে লুকিয়ে রাখা ছিল।
উদ্ধার হওয়া জিনিসের মধ্যে সোনার বালা, দুল, আংটি, রুপোর বিস্কুট, চেন, কলম, কোমরবন্ধ, তিনটি মোবাইল ফোন এবং বেশ কয়েকটি হাতঘড়িও রয়েছে। পুলিশ মনে করছে, পাকা চোর হলেও করণরা জহুরি নয়। কেননা, চুরি করা বেশ কয়েকটি ঝুটো গয়নাও সোনার ভেবে বালিশের ভিতরে সযত্নে লুকিয়ে রেখেছিল তারা। দুই দুষ্কৃতীই আপাতত শ্রীঘরে।
তদন্তকারীদের দাবি, লক্ষ্মণ-করণ চুরিতে সিদ্ধহস্ত হলেও খুব বেশি কসরত তাদের না-পসন্দ। তারা ‘টার্গেট’ করত ফাঁকা বাড়ি। তার পর সময়-সুযোগ মতো ‘অপারেশন’। জেরায় করণরা জানিয়েছে, কোথায় চুরি করবে তা ঠিক করতে রীতিমতো ‘রেইকি’ করত তারা। এ জন্য সাইকেল নিয়ে পাড়ায়-পাড়ায় ঘুরে নানা জিনিস ফেরি করত। বেচাকেনার ফাঁকেই কোন বাড়ি তালাবন্ধ বা কোন সময় বাড়িতে কেউ থাকেন না, এমন খুঁটিনাটি নানা তথ্য সংগ্রহ করত তারা। তার পরে সময় মিলিয়ে ফাঁকা বাড়িতে ঢুকে গয়না বা টাকা হাতিয়ে চম্পট দিত।
ওই দু’জনের চুরির পদ্ধতির কথা জানতে পেরে ফের সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট। কমিশনারেটের কর্তাদের বক্তব্য, বাড়িতে নানা কারণে অনেক উটকো লোক আসে। তাদের থেকে সাবধান থাকা উচিত। গোপন কোনও তথ্য যেন ঘুণাক্ষরেও বাইরের লোকের কানে না-পৌঁছয়, সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকা জরুরি। সর্বোপরি, বাড়ির সকলে একাধিক দিনের জন্য কোথাও গেলে স্থানীয় থানা বা ফাঁড়িতে অবশ্যই জানিয়ে যাওয়া উচিত। সে ক্ষেত্রে পুলিশ সেখানে টহলদারি বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে পারে।