নিষেধ শিকেয়, কাঁপাল শব্দবাজি

গত কয়েক বছর ধরে হুগলির শহরাঞ্চলে কালিপুজোয় শব্দবাজির দাপট কমছিল। এ বার শব্দবাজি নিয়ে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি আতসবাজি পোড়ানোর সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

হাওড়া ও হুগলি শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৮ ১২:০৯
Share:

বেলাগাম: আরামবাগে দেখা গেল এই ছবি। ছবি: মোহন দাস

ধারাবাহিকতা বজায় রাখল গ্রাম এবং শহর!

Advertisement

গত কয়েক বছর ধরে হুগলির শহরাঞ্চলে কালিপুজোয় শব্দবাজির দাপট কমছিল। এ বার শব্দবাজি নিয়ে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি আতসবাজি পোড়ানোর সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার কালীপুজোর রাতে হুগলির শহরাঞ্চলে শব্দবাজি অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত ছিল। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে উল্টো ছবি। হাওড়া গ্রামাঞ্চলেও দেদার শব্দবাজি ফেটেছে।

বিকেল থেকেই খানাকুল, পুরশুড়া, গোঘাট, আরামবাগের বিভিন্ন জায়গায় যথেচ্ছ শব্দবাজি ফেটেছে বলে অভিযোগ। আরামবাগ শহরে সন্ধ্যা থেকে বিকট শব্দে চকোলেট বোমা ফাটে। থানার পাশের এলাকায় কানফাটানো আওয়াজে বোমা ফেটেছে। এ নিয়ে এক পুলিশকর্মীকে প্রশ্ন করলে তাঁর জবাব, “কোথায় শব্দ! শ্রোতার ভ্রম।’’ তারকেশ্বর পুর এলাকাতেও শব্দবাজিকে বাগে আনা জায়নি বলে অভিযোগ। হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক পুলিশ আধিকারিক অবশ্য বলেন, ‘‘পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়াররা ঘুরছেন। যাঁরা নিষিদ্ধ বাজি ফাটাচ্ছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Advertisement

সকালে মশাটে অহল্যাবাঈ রোডে প্রতিমা নিয়ে যেতে যেতে শব্দবাজি ফাটিয়েছেন পুজো-উদ্যোক্তারা। সন্ধ্যা নামতেই ধনেখালি, চণ্ডীতলা, সিঙ্গুর, হরিপাল, ধনেখালি, চাঁপাডাঙা, বালিগো়ড়ি, পোলবা, খামারগাছি-সহ বিভিন্ন জায়গায় বাজি ফেটেছে।

উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুর, ভদ্রেশ্বর, কোন্নগর, চন্দননগর, চুঁচুড়া, ডানকুনির মতো শহরে শব্দবাজি তুলনায় অনেক কম ফেটেছে বলে জানা গিয়েছে। তবে রাত ৮টার পর থেকে বিচ্ছিন্ন ভাবে কিছু জায়গায় শব্দবাজির আওয়াজ ভালই টের পাওয়া গিয়েছে। এই সব জায়গায় বাড়ি বা ফ্ল্যাটের ছাদে বাজি ফেটেছে। পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত দু-তিন বছরের তুলনায় কম হলেও বাজি ফেটেছে। চন্দননগরে পুলিশের ভূমিকা বেশ খারাপ। চন্দননগর, চুঁচুড়ায় ফ্ল্যাটে এবং মধ্যবিত্ত এলাকায় বাজি ফাটানোর প্রবণতা বেশি। তুলনায় বস্তি এলাকায় দাপট কম।’’ চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অজয় কুমার এবং গ্রামীণ পুলিশের ডিএসপি (সদর) অরিন্দম দাস জানান, সোমবার সন্ধ্যায় হুগলির সিমলাগড় স্টেশন বাজার এলাকার এক বিক্রেতার থেকে শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

সন্ধ্যা নামতেই বাগনান, উলুবেড়িয়া-সহ গ্রামীণ হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় শব্দবাজির দাপটে কান পাতা দায় হয়ে ওঠে। অভিযোগ, বিকট আওয়াজ করে চকোলেট বোমা, গাছবোমা— সবই ফেটেছে। পুলিশের নজরদারি চোখে পড়েনি। নাট্যকার অনুপ চক্রবর্তী, চিকিৎসক, অনুপ মঙ্গলদের বক্তব্য, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নিষেধ মানা হচ্ছে না।’’ অনেকেই অবশ্য জানান, শব্দবাজির দাপট গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম ছিল। হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপার গৌরব শর্মা বলেন, ‘‘পুলিশের নজরদারি চলছে। শব্দবাজি ফাটালে গ্রেফতার করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement