সৎমাকে মেরে থানায় ছেলে

পুলিশকে চন্দন অভিযোগে জানিয়েছে, বাসন্তীদেবী তাকে ছেলের মতো স্নেহ করতেন না। বরং অত্যাচার করতেন। এ জন্য মায়ের বিরুদ্ধে ছোট থেকেই চন্দনের মনে ক্ষোভ জমছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৮ ০৩:৪৩
Share:

নৃশংস: ঘর থেকে বের করা হচ্ছে দেহ (ইনসেটে) অভিযুক্ত চন্দন প্রসাদ । নিজস্ব চিত্র

সৎমাকে খুন করার অভিযোগ উঠল ছেলের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সকালে হাওড়া থানা এলাকার বনবিহারী বসু রোডে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার পরে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে সেই ছেলে। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেরা শুরু করেছে। ধৃত যুবকের নাম চন্দন প্রসাদ। মৃতার নাম বাসন্তী প্রসাদ।

Advertisement

পুলিশ জানায়, এ দিন পারিবারিক অশান্তি চলার সময়ে ঘরেই মা বাসন্তীদেবীকে লোহার রড দিয়ে পরপর মাথায় আঘাত করে চন্দন। আঘাত সহ্য করতে না পেরে ঘরের মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন বছর পঞ্চান্নের বাসন্তীদেবী। রক্তে তখন ভেসে যাচ্ছে গোটা মেঝে। এর পরে নিজেই হাওড়া থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে চন্দন।

তদন্তে পুলিশ জেনেছে, হাওড়া জুট মিলের কর্মী শ্রীবচন প্রসাদের স্ত্রী যখন মারা যান, তখন তাঁদের ছেলে চন্দন মাত্র দু’বছরের। ছোট্ট ছেলেকে মানুষ করতেই বাসন্তীদেবীকে বিয়ে করেন তিনি।পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, ছোট থেকেই সৎমায়ের সঙ্গে বনিবনা হত না চন্দনের।পুলিশকে চন্দন অভিযোগে জানিয়েছে, বাসন্তীদেবী তাকে ছেলের মতো স্নেহ করতেন না।বরং অত্যাচার করতেন।এ জন্য মায়ের বিরুদ্ধে ছোট থেকেই চন্দনের মনে ক্ষোভ জমছিল।

Advertisement

তদন্তকারীরা জানান, পাঁচ মাস আগে চন্দন বিয়ে করে ঘরে বৌ আনার পরে সেই আগুনে যেন ঘি পড়ে।পারিবারিক অশান্তি চরমে ওঠে। প্রতিদিন শুরু হয় মায়ের সঙ্গে ছেলের ঝগড়া। এ দিনও তেমনই শুরু হয়েছিল। বনবিহারী বসু রোডের যে বহুতলের একতলায় বসবাস করে শ্রীবচন প্রসাদের পরিবার, ঠিক তার পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা কুসুমদেবী বলেন, ‘‘দেওয়ালের এ পার আর ও পার, অথচ এই ঘটনার কিছুই টের পেলাম না! এমনকি কোনও আর্তনাদও শুনিনি।’’ ওই ফ্ল্যাটের অন্য বাসিন্দারা জানান, মা ছেলের মধ্যে কোনও সময়েই সদ্ভাব ছিল না। প্রায় দিন ঝগড়া লেগে থাকত। কিন্তু এমন নৃশংস ভাবে মাকে যে চন্দন খুন করতে পারে, তা যেন কেউ ভাবতেই পারছেন না। ঘটনার সময়ে চন্দনের বাবা জুটমিলে কাজে গিয়েছিলেন। সকাল থেকে মা-ছেলের ঝগড়া শুরু হলেও কেউ থামাতে আসেননি। প্রতিবেশীরাও ভেবেছিলেন, ঠিক থেমে যাবে। কিন্তু তার মাঝে যে এত বড় ঘটনা ঘটে গিয়েছে, তা টের পাওয়া গেল ফ্ল্যাটে পুলিশ আসার পরে। চন্দন নিজেই থানায় এসে অপরাধের কথা স্বীকার করে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেফতার করে তদন্তে নামে পুলিশ। যে রড দিয়ে বাসন্তীদেবীকে খুন করা হয়েছে, সেটি উদ্ধার করা হয়েছে। চন্দনের বাবা এবং স্ত্রীকে থানায় এনে জি়জ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement